সাতক্ষীরায় করোনাকালীন সময়ে রেকর্ড পরিমাণ প্রায় ৪০ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করেছে জেলা ট্রাফিক বিভাগ। গত ৭ মাসে জেলার বিভিন্ন সড়কে বে-আইনিভাবে চলাচলকারী মোটরযান থেকে এক হাজার ১০৩টি মামলার মাধ্যমে এসব জরিমানা আদায় করা হয়।
তবে ট্রাফিক আইনের সঠিক প্রয়োগ ও বর্তমান মোটরযান আইনে জরিমানার পরিমান বেশি হওয়ায় মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির কারণে সড়ক দুর্ঘটনা আগের চেয়ে অনেক কমেছে বলে মনে করছেন ট্রাফিক বিভাগের সংশ্লিষ্টরা।
জেলা ট্রাফিক পুলিশ অফিস সূত্র জানায়, বিগত ২০২০ সালের ২৪ ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের ৩১ জুলাই পর্যন্ত জেলায় মোটরযান আইনে মামলা করা হয়েছে এক হাজার ১০৩টি। এসব মামলায় জরিমানা করা হয়েছে ৩৯ লাখ ৫১ হাজার পাঁচশত টাকা। এসব মামলার মধ্য থেকে ইতিমধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে ৮৭৪টি। নিষ্পত্তিকৃত মামলা থেকে আদায় করা হয়েছে ২৯ লাখ ৯৮ হাজার ৫০০ টাকা। বাকি ২২৯ টি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। যা থেকে আরও আদায় হবে ৯ লাখ ৫৩ হাজার টাকা।
জেলার ট্রাফিক ইনসপেক্টর (টিআই) মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, করোনাকালীন বিধি-নিষেধ ও লকডাউনের সময় নিয়মিত চেকপোস্ট বসিয়ে জেলা ট্রাফিক পুলিশের একাধিক টিম সড়কে চলাচলকারী অবৈধ মোটরযানের বিরুদ্ধে এসব মামলা দিয়েছে। ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে অবৈধ মোটরযানের বিরুদ্ধে সব সময়ই অভিযান পরিচালিত হয়। বৈধ কাগজপত্র ছাড়া মোটরযান বের হলেই আমরা জরিমানা ও মামলা দিয়ে থাকি। তবে, আইনের সঠিক প্রয়োগ ও বর্তমান আইনে জরিমানার পরিমান বেশি হওয়ায় মানুষের মধ্যে আগের চেয়ে সচেতনতা অনেকাংশে বেড়েছে। সে কারণে সড়কে দুর্ঘটনাও কমেছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ডিজিটাল পান্স মেশিনের মাধ্যমে মামলা দেওয়া হয়ে থাকে। কোন প্রকার ভোগান্তী ছাড়াই দোকান থেকে টাকা জমা দিয়ে এসএমএস নিয়ে অফিসে আসলেই মামলা নিষ্পত্তি করে কাগজপত্র ফেরৎ দেওয়া হয়ে থাকে।
সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম (বার) বলেন, বর্তমান মোটরযান আইনে জরিমানার পরিমান অনেক বেশি। সে কারণে মানুষের মধ্যে আইন মানার একটা প্রবনতা লক্ষ করা যাচ্ছে। আগে মানুষের মধ্যে হেলমেট পরার প্রতি অনিহা দেখা গেলেও বর্তমান সে চিত্র অনেকটা পাল্টে গেছে। সে কারণে আগের চেয়ে সড়ক দুর্ঘটনাও অনেক অংশে কমেছে।
তিনি আরও বলেন, কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় পুলিশ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাঠে কাজ করছে। এ জন্য জেলার সাত উপজেলায় সার্বক্ষণিক চালু রয়েছে ২৭টি চেকপোস্ট।
এছাড়াও ট্রাফিক বিভাগ নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে অবৈধ মোটরযানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। সড়কে অবৈধ মোটরযানের বিরুদ্ধে নিয়মিত জরিমানা ও মামলা করেছে। তবে জরিমানা কোন সমাধান নয় উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, আমরা সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে মামলা বা জরিমানার পাশাপাশি সচেতনতার কাজটিও করে যাচ্ছি।
খুলনা গেজেট/ টি আই