সাতক্ষীরায় গত ২৪ ঘন্টায় করোনা উপসর্গ নিয়ে ৩ নারীর মৃত্যু হয়েছে। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। এনিয়ে জেলায় ৩ অগষ্ট মঙ্গলবার পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মোট ৮৫ জন। আর উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন কমপক্ষে ৫৫৭ জন।
করোনা উপসর্গে মৃতরা হলেন, সাতক্ষীরার সদর উপজেলার বাগটিয়া গ্রামের মোঃ ইসহাক আলীর স্ত্রী ফিরোজা বেগম (৬৫), সাতক্ষীরার শহরের আমতলা এলাকার প্রসনজিতের স্তী নমিতা (৭০) ও তালা উপজেলার গোনালী গ্রামের শৈলেন দাসের স্ত্রী শশী দাসী (৫১)।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনার নানা উপসর্গ নিয়ে ও আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তিরা গত ২২ জুলাই থেকে ৩ আগষ্টের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩ আগষ্ট ভোর সোয়া রাত ১২ টা থেকে রাত ১০টা ৪ মিনিটের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে তাদের মৃত্যু হয়।
সামেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, ৪ আগষ্ট সকাল পর্যন্ত মোট ১৮১ জন রোগী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এর মধ্যে ১৭ জন করোনা পজেটিভ ও বাকি ১৬৪ জন সাসপেক্টেড। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ২৫ জন ও সুস্থ্য হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়েছেন ১৪ জন। নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (আইসিইউ) ভর্তি আছে ৮ জন।
এদিকে সাতক্ষীরায় ফের বেড়েছে করোনা সংক্রমনের হার। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে আরো ৪৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ সময় ২৪৫ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। শনাক্তের হার ১৭ দশমিক ৯৫শতাংশ। এর আগের দিন শনাক্তের হার ছিল ১৩ দশমিক ৪৭শতাংশ।
সাতক্ষীরা সদর হাসপতালের মেডিকেল অফিসার ও জেলা করোনা বিষয়ক তথ্য কর্মকর্তা ডাঃ জয়ন্ত কুমার সরকার জানান, গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় করোনা উপসর্গে মারা গেছে ৩ জন। এসময় ২৪৫টি নমুনা পরীক্ষা করে ৪৪ জনের করোনা পজেটিভ সনাক্ত হয়। এরমধ্যে সামেক হাসপাতালের আরটি পিসিআর ল্যাবে ৯৩ টি নমুনা পরীক্ষা করে ৪ জনের এবং বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কপ্লেক্সে র্যাপিড এন্টিজেন কীটে ১৫২ টি নমুনা পরীক্ষা করে আরো ৩৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ১৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ।
তিনি আরো বলেন, মঙ্গলবার ৩ আগষ্ট পর্যন্ত সাতক্ষীরা জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৫ হাজার ৮৩৩ জন। জেলায় মোট সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ৬৩০ জন। বর্তমানে জেলায় করোনা রোগী রয়েছে ১ হাজার ১১৮ জন। এরমধ্যে হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীর সংখ্যা ৩১ জন। ভর্তি রোগীর মধ্যে সরকারি হাসপাতালে ২৮ জন ও বেসরকারি হাসপাতালে ৩ জন রয়েছেন। বাড়িতে হোম আইসোলেশনে আছেন ১ হাজার ৮৭ জন।
বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৪৯ জন। সরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৮১ জন। সরকারি ও বেসরকারি মিলে জেলায় মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২৩০ জন। গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় সুস্থ হয়েছেন ৫৫ জন। জেলায় ৩ আগষ্ট পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে ৮৫ জন এবং উপসর্গে মারা গেছেন আরো ৫৫৭ জন।