সাতক্ষীরায় গত ২৪ ঘন্টায় করোনা উপসর্গে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ ফেব্রুয়ারি তাদের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে জেলায় ১৩ ফেব্রুয়ারি শনিবার পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৯১ জন এবং করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন মোট ৮২৯ জন। কমেছে সংক্রমণের হার। এদিকে ফের কমেছে সংক্রমণের হার।
করোনা উপসর্গে মৃত ব্যক্তিরা হলেন, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ইন্দিরা গ্রামের হাফেজ নুর মোহাম্মাদের ছেলে আব্দুল খালেক (৯৬) ও দেবহাটা উপজেলার সখিপুর গ্রামের মৃদ শাবুর আলীর ছেলে রিয়াজুল ইসলাম (৬০)।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনার নানা উপসর্গ নিয়ে গত ৩ ফেব্রুয়ারি ও ৫ ফেব্রুয়ারি তারা সামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ ফেব্রুয়ারি বেলা দেড়টা ও সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার সময় তারা মারা যান।
এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে আরো ৯ জন করোনা পজেটিভ সনাক্ত হয়েছে। এসময় র্যাপিড এন্টিজেন কীট ও সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালের আরটি পিসিআর ল্যাবে মোট ৯৭ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। শনাক্তের হার ৯ দশমিক ২৮শতাংশ। এর আগের দিন আগে শনাক্তের হার ছিল ১৮ দশমিক ১০ শতাংশ।
সামেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনার নানা উপসর্গ নিয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে মোট ৩৩ জন রোগী । এর মধ্যে ৭ জনের করোনা পজেটিভ ও বাকি ২৬ জন সন্দেহজনক (সাসপেক্টেড)। নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (আইসিইউ) ভর্তি আছে ২ জন।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডাঃ হুসাইন সাফায়াত জানান, গত ২৪ ঘন্টায় সাতক্ষীরা সামেক হাসপাতালের আরটি পিসিআর ল্যাবে ৪৮ টি নমুনা পরীক্ষা করে ৫ জনের করোনা সনাক্ত হয়। এছাড়া সদর হাসপাতাল সহ বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে র্যাপিড এন্টিজেন কীটে ৪৯টি নমুনা পরীক্ষা করে আরো ৪ জনের করোনা সনাক্ত হয়েছে। সনাক্তের হার ৯ দশমিক ২৮ শতাংশ। জেলায় গড় সংক্রমণের হার ২১ দশমিক ০৮ শতাংশ।
তিনি আরো বলেন, জেলায় ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭ হাজার ৮৪৮ জন। জেলায় মোট সুস্থ হয়েছেন ৭ হাজার ৩১২ জন। গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়েছে ৪২ জন। বর্তমানে জেলায় করোনা রোগী রয়েছে ৪৪৫ জন। এরমধ্যে হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীর সংখ্যা ৭ জন। বাড়িতে হোম আইসোলেশনে আছেন ৪৩৮ জন। জেলায় প্রথম থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি প্রর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৯১ জন এবং উপসর্গে মারা গেছেন আরো ৮২৯ জন।
সিভিল সার্জন আরো জানান, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেলায় ১ লাখ ৬৬ হাজার ৮৫৮ জন এস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন। আর দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ১ লাখ ২ হাজার ৮১৭ জন। এদিকে সেনোফর্ম ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ৯ লাখ ১৯ হাজার ৯৮৮ জন এবং দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ৮ লাখ ২৫ হাজার ৭৮৪ জন।
ফাইজার ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ২ লাখ ২৩ হাজার ৪৯ জন। দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ৪১ হাজার ৪৯৪ জন। সিনোভ্যাক ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ১ লাখ ২৫ হাজার ৮৭৪ জন। সিনোভ্যাক ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ৫৭ হাজার ৬৭৩ জন। এছাড়া এস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের বুষ্টার ডোজ গ্রহণ করেছেন ৩৩ হাজার ৯১ জন এবং ফাইজার ভ্যাকসিনের বুষ্টার ডোজ গ্রহণ করেছেন ৯১ জন।
তিনি আরো জানান, সাতক্ষীরা জেলায় এ পর্যন্ত প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে ১৪ লাখ ৩৫ হাজার ৭৬৯ জনকে। দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে ১০ লক্ষ ২৭ হাজার ৭৬৮ জনকে এবং তৃতীয় ডোজ ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে ৩৩ হাজার ১৮২ জনে।
খুলনা গেজেট/এনএম