সাতক্ষীরার উপকুলীয় এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ সংস্কার ও জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসুচি পালন করেছে জেলা নাগরিক কমিটি। দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে বুধবার বেলা ১১ টায় সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সামনে ঘন্টাব্যাপী এই মানববন্ধন কর্মসুচি পালিত হয়। পরে একই দাবিতে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক আনিসুর রহিমের সভাপতিত্বে মানবন্ধনে বক্তৃতা্ করেন অধ্যক্ষ আবু আহমেদ, প্রফেসর আব্দুল হামিদ, সুধাংশু শেখর সরকার, এড. শেখ আজাদ হোসেন বেলাল, ওবায়দুস সুলতান বাবলু, এড. আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ‘পানিতে ডুবে রয়েছে সাতক্ষীরার অধিকাংশ এলাকা। লাখ লাখ মানুষ পানির উপর ভাসছে। ফসলের ক্ষেত, মাছের ঘের, শাকসবজিসহ সব ধরণের কৃষি খামার সম্পূর্ণভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বহু এলাকায় মানুষের রান্না-বান্না করারও জায়গা নেই। মৃত মানুষের দাফন ও সৎকার করার জায়গা নেই। পয়ঃনিষ্কাশন, স্যানিটেশন, বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে।
বক্তারা আরো বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় আম্পান এর পরপরই পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও সচিবসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের অনেকেই এই এলাকা পরিদর্শন করেন। এলাকায় নদীর পানি প্রবেশ বন্ধ করা, দ্রুত বাঁধ নির্মাণসহ সবধরণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। স্থানীয় জনসাধারণ স্বেচ্ছাশ্রমে নিজেরা অর্থ দিয়ে বাঁশ ও বস্তা কিনে সাতক্ষীরা জেলার বড় ধরণের তিনটি পয়েন্ট ছাড়া আর সকল স্থানে বিকল্প রিংবাঁধ নির্মাণ করে নদীর পানি প্রবেশ বন্ধ করে। কিন্তু স্বেচ্ছাশ্রমে যেনতেনভাবে পানি বন্ধের পর বাঁধগুলো আরও মজবুত করতে আর কোন তৎপরতা দেখা যায়নি। ভেঙ্গে যাওয়া এসব বাঁধের অনেকস্থানে পূর্ব থেকেই ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছিল। অনেকস্থানে ভাঙ্গার পর ডিপিএম এর মাধ্যমে ইমার্জেন্সি কাজ করার জন্য নতুন করে ঠিকাদারও নিয়োগ করা হয়। কিন্তু ইমার্জেন্সি কাজের ও পূর্ব নির্ধারিত অধিকাংশ ঠিকাদার এলাকার কোন কাজ করেননি। এর ফলে সাম্প্রতিক অমাবশ্যায় জোয়ারের পানির প্রবল চাপে পূর্বের ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধগুলো নতুন করে ভেঙ্গে গিয়ে এলাকায় এক দুর্বিসহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
বক্তারা এ সময় এই পরিস্থিতির জন্য দায়ীদের চিহ্নিত করনসহ উপকুলীয় এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ সংস্কার ও জলাবদ্ধতা নিরসনের জোর দাবি জানান। পরে একই দাবিতে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-১ ও ২ এর নির্বাহী প্রকৌশলীর মাধ্যমে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী বরাবর পৃথক স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
খুলনা গেজেট/এনএম