সাতক্ষীরা পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র কাজী ফিরোজ হাসান ও প্রধান নির্বাহি (সিইও) নাজিম উদ্দীনের বিরুদ্ধে ৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকা লুটপাট ও নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সাতক্ষীরা পৌর মেয়র তাসকিন আহমেদ চিশতি রোববার (১১আগস্ট) দুপুরে পৌরসভার কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন।
পৌর মেয়র চিশতি বলেন, আমি একটি রাজনৈতিক দলের কর্মী হওয়ার কারণে মিথ্যা অজুহাত দেখিয়ে বারবার আমাকে সম্পূর্ণ বেআইনি ও অন্যায়ভাবে বরখাস্ত করে জেলে প্রেরণ করা হয়েছে। আমি দেশের বাহিরে থাকা অবস্থায়ও তথাকথিত মিথ্যা ও বানোয়াট নাশকতা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।
তিনি বলেন, আমি কাউন্সিলরদের দাবি পূরণে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে তারা জোটবদ্ধ হয়ে ষড়যন্ত্র করে আমার বিরুদ্ধে বারবার মিথ্যা অভিযোগে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে আমাকে অর্থনৈতিক, শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সরকার কর্তৃক বেআইনিভাবে আমাকে বরখস্ত করার পর আমি বারবার হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ হতে স্থগিত আদেশ নিয়ে আইনগতভাবে দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করলে প্রশাসনকে দিয়ে আমাকে নানাভাবে হয়রানি করা হয়।
পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাজিমুদ্দিনের যোগসাজশে ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী ফিরোজ হাসান আমাকে পৌরসভায় প্রবেশ করতে না দিয়ে জোর করে মেয়রের কার্যালয় দখল করে নেয়। আইনের তোয়াক্কা না করে নিজেকে স্ব-ঘোষিত ভারপ্রাপ্ত মেয়র দাবি করে ফিরোজ হাসান। তারা পৌর অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জিম্মি করে ব্যাপক অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতি করে। সর্বশেষ বিগত ৩০/৬/২০২৩ তারিখে আমি সর্বশেষ যেদিন অফিস করি সেদিন পৌরসভায় ফান্ডে ৯ কোটি ১৭ লাখ ৬১ হাজার ৮৮৪ টাকা ছিল। অথচ আজ পর্যন্ত ফান্ডে রয়েছে ৭ কোটি ৩ লাখ ৬২ হাজার টাকা। অর্থাৎ এই ফান্ড থেকে তারা ২ কোটি টাকা লুটপাট করেছে।
এছাড়া পৌর সভার বাড়ির প্লান পাশ করার জন্য নাগরিকদের নিকট থেকে কাউন্সিলর কাজী ফিরোজ হাসান রশিদ ছাড়ায় ১লাখের টাকা চাঁদা আদায় করে তা লুটপাট করেছে। এখানেই শেষ নয় দ্য পোল স্টার স্কুলে দুই জন স্টাফ নিয়োগ দেওয়ার নাম করে ১৬ লাখ টাকা নিয়েছে তারা।
দুর্নীতির ফিরিস্তি এখানেই শেষ নয়, আমার অনুপস্থিতিতে কাজী ফিরোজ হাসান ও সিইও নাজিমুদ্দিনের নেতৃত্বে রাস্তাঘাট নির্মাণ, চিকিৎসা বাবদ, অবকাঠামো উন্নয়নের নামে সাড়ে ৩ কোটি টাকা লুটপাট করেছে। এছাড়া পৌরসভার ১০ টি পদে স্থায়ী কর্মকর্তা নেওয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কাজী ফিরোজ হাসান ও সিইও নাজিমুদ্দিন লাখ লাখ টাকা বাণিজ্য করার চেষ্টা করেছিল। যা সাংবাদিকদের লেখনীর কারনে সেই বাণিজ্যের বিজ্ঞপ্তি স্থগিত হয়।
পৌর মেয়র চিশত আরো বলেন, পৌরসভার সিইও নাজিমুদ্দিন পৌরসভার মতো একটি পবিত্র জায়গায় বসে মদ পান করতো। তার অত্যাচারে পৌরবাসী অতিষ্ঠ ছিল।
সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি এসময় বলেন, এই দুর্নীতির সকল টাকা ফেরত দিতে হবে। তা না হলে তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হবে।
খুলনা গেজেট/এএজে