শতভাগ রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং কোম্পানীর চাঁদাবাজি ঘটনার অন্যতম পরিকল্পনাকারী জাকারিয়াসহ অপর আসামীরা ৯দিনেও গ্রেপ্তার হয়নি। ফলে ভুক্তভোগীদের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। তারা বলেছেন, প্রকাশ্যে এমন ঘটনা ঘটিয়ে তারা পার পেয়ে গেলে অপরাধীরা এ ধরণের ঘটনায় উৎসাহিত হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক সময়ে ক্ষমতাসীন দলের নাম ব্যবহার করে মশিয়ালী এলাকায় আতংক সৃষ্টি করে মশিয়ালীর মৃত হাসান শেখের ছেলে মো. জাফরিন শেখ ও মো. জাকারিয়া শেখ । তারা দলের প্রভাবশালী নেতাদের সাথে ছবি তুলে লাইম লাইটে আসে। গ্রামের সহজ সরল মানুষ তাদের ভয় পেত। সেকারণে ওই এলাকায় অপরাধ করতে দ্বিধাবোধ করত না। ২০২০ সালের ১৬ জুলাই রাতে স্থানীয় একটি মাদ্রাসা কমিটির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তাদের হাতে খুন হয় মশিয়ালী গ্রামের মিল শ্রমিক নজরুল ইসলাম শেখ, কলেজ ছাত্র সাইফুল ইসলাম ও গোলাম রসুল। তারা শত শত গ্রামবাসীর ওপর গুলিবর্ষণ করে। ওই মামলায় জামিনে বের হয়ে তারা আবারও তাদের অবস্থান জানান দিতে ফের বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তারই ধারাবাহিকতায় আটরা গিলাতলা এলাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজি শুরু করে। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে সম্প্রতি ওই এলাকার এক ব্যবসায়ী প্রাণ ভয়ে পালিয়ে যায়। তারপরও তারা থেমে থাকেনি। একাধিক বার ফোন করে তার কাছে চাঁদা দাবি করে তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মশিয়ালী গ্রামের এক ব্যক্তি খুলনা গেজেটকে বলেন, জাফরিন তার বড়ভাই জাকারিয়ার কথামতো চলে। জাফরিন কোথাও বেধে গেলে বড়ভাই সেখানে গিয়ে উপস্থিত হয়ে বলে এখানে সে আর কখনও আসবেনা। কিন্তু দেখা যায় পরবর্তীতে জাকারিয়া তাকেই আবার সেখানে অপরাধ করতে পাঠান। তারা এই এলাকার আতঙ্ক। তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার হওয়া উচিত।
সাউথ এশিয়ান প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং কর্মকর্তা গোলাম সারওয়ার বলেন, এখনও সেদিনের কথা তিনি ভুলতে পারেননি। জাফরিনের বড় ভাই জাকারিয়াকে পুলিশ এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তারা ওই এলাকার সন্ত্রাসী। তারা মশিয়ালী এলাকার আলোচিত ট্রিপল মার্ডারের আসামি। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ওইদিনের ওই ঘটনার পর থেকে তিনি জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। একা একা বাড়ির বাইরে যেতে পারেন না। কাউকে সাথে নিয়ে তাকে বের হতে হয়। লোকমুখে তিনি জানতে পেরেছেন জাকারিয়া ও জাফরিন গ্যাংয়ের লোকজন রাস্তায় ঘোরাফেরা করছে। তিনি তাদের হামলার ভয়ে সার্বক্ষণিক আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে থাকেন।
এদিকে খানজাহান আলী থানার অফিসার ইনচার্জ মো: কামাল হোসেন খান বলেন, গত ১৬ এপ্রিল দিবাগত রাতে কোম্পানীর সাউথ এশিয়ান প্রিন্টিং এর সোহেল ফারাজী বাদী হয়ে ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ওই রাতে জাফরিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কিন্তু মামলার অন্যান্য আসামিদের এখনও পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ওসি জানান, জাকারিয়া ও জাফরিনের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক অভিযোগ রয়েছে। খানজাহান আলী থানায় জাফরিনের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও হত্যাসহ ৯ টি মামলা রয়েছে।
খুলনা গেজেট/কেডি