খুনীদের দুষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবির মধ্য দিয়ে যশোরের দৈনিক রানার সম্পাদক আরএম সাইফুল আলম মুকুলের ২২তম হত্যাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। ১৯৯৮ সালের এ দিনে তিনি সন্ত্রাসীদের বোমা হামলায় নিহত হন।
হত্যাবার্ষিকী উপলক্ষে কর্মসূচির মধ্যে ছিল, এদিন সকালে সাংবাদিকদের কালোব্যাজ ধারণ, বেলা সাড়ে ১১ টায় শোকর্যালি, পরে মরহুমের স্মৃতিস্তম্ভে পুস্পস্তবক অর্পণ। প্রেসক্লাব যশোর, যশোর সংবাদপত্র পরিষদ, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়ন, সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোর, যশোর জেলা সাংবাদিক ইউনিয়ন, যশোর ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনসহ সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন স্মৃতিস্তম্ভে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে তার আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া করা হয়।
এদিকে মামলা সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৮ সালের ৩০ আগস্ট রাতে দৈনিক রানার সম্পাদক সাইফুল আলম মুকুল শহর থেকে বেজপাড়ার নিজ বাসভবনে যাওয়ার পথে চারখাম্বার মোড়ে দুর্বৃত্তদের বোমা হামলায় নিহত হন। পরদিন নিহতের স্ত্রী হাফিজা আক্তার শিরিন অজ্ঞাত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যশোর কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন। পরবর্তীতে তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি যশোর জোনের তৎকালীন এএসপি দুলাল উদ্দিন আকন্দ ১৯৯৯ সালের ২৩ এপ্রিল সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামসহ ২২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। একপর্যায়ে আইনি জটিলতায় মামলার কার্যক্রম থমকে যায়।
দীর্ঘদিন পর ২০০৫ সালে হাইকোর্টের একটি বিশেষ বে থেকে মুকুল হত্যা মামলা পুনরুজ্জীবিত করে বর্ধিত তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়। ওই বছরের ২১ ডিসেম্বর সিআইডি কর্মকর্তা মওলা বক্স নতুন দুইজনের নাম অন্তর্ভুক্ত করে আদালতে সম্পূরক চার্জশিট দেন। ২০০৬ সালের ১৫ জুন যশোরের স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল (৩) এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত (২) ২২ জনকে অভিযুক্ত করে মুকুল হত্যা মামলার চার্জ গঠন করেন। এসময় মামলা থেকে তৎকালীন মন্ত্রী তরিকুল ইসলাম ও রূপম নামে আরেক আসামিকে অব্যাহতি দেয়া হয়। ২০১০ সালে মামলার ২৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয় যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতে।
আদালত সূত্র জানায়, মুকুল হত্যা মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে আসামি দৈনিক ইত্তেফাকের বিশেষ প্রতিনিধি ফারাজী আজমল হোসেন হাইকোর্টের একটি বেে আবেদন করেন। তিনি উচ্চ আদালতে যাওয়ায় ফের মুকুল হত্যা মামলার কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর এম ইদ্রীস আলী জানান, মুকুল হত্যা মামলার বিচারকাজ উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের কারণে বন্ধ রয়েছে। এই স্থগিতাদেশ নিষ্পত্তির পর বিচার কাজ এগিয়ে নেয়া সম্ভব হবে।
২২তম হত্যাবার্ষিকীতে যশোরের সাংবাদিকরা মুকুল হত্যা মামলার বিচার কাজ দ্রুত সম্পন্ন ও খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে।