খুলনা-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এডভোকেট শেখ মোঃ নুরুল হক গত ৯ জুলাই করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। ২৩ জুলাই দ্বিতীয় নমুনা পরীক্ষায় তিনি করোনামুক্ত হন। কিন্তু মস্তিস্ক ও হার্ট এর বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে বুধবার ২৯ জুলাই দুপুরে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন। সরকারি এমএম সিটি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ খন্দকার আইনুল ইসলাম কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে গত ৮ জুলাই ভর্তি হয়েছিলেন করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে। পরে ১৯ জুলাই দ্বিতীয় পরীক্ষা তার নেগেটিভ আসলেও তিনি সুস্থ হননি। ফুসফুস ও কিডনি জনিত রোগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে ২২ জুলাই। দৌলতপুরের ব্যবসায়ী মিন্টু শেখ গত ৫ জুলাই করোনা আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন নুরনগর করোনা ডেডিকেডেট হাসপাতালে। ২১ জুলাই ও ২৪ জুলাই দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় করোনার নমুনা পরীক্ষায় তার ফল নেগেটিভ আসে। এরপর চিকিৎসার জন্য গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৮ জুলাই তার মৃত্যু হয়। নগরীর বয়রা ক্রস রোড এলাকার বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক মোঃ আব্দুস শহীদ সরদার এরও একইভাবে মৃত্যু হয়েছে। করোনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর নেগেটিভ আসার পর শরীরে বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গের রোগের কারণে অন্য হাসপাতালে ভর্তি রযেছে আরও অনেকে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, ১৪ থেকে ২১ দিনের মধ্যে সাধারণত করোনা ভাইরাস শরীর থেকে বিদায় নেয়। কিন্তু এ ভাইরাস ফুসফুস কিডনি ও মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে ফেললে তা আর পুনরায় আগের অবস্থায় ফিরে আসে না। ফলে করোনা হাসপাতালে আইসিইউ সাপোর্টে থাকা রোগীদের মধ্যে ভালো হওয়ার সম্ভাবনা খুবই সীমিত।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, খুলনায় বুধবার ২৯ জুলাই পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়ে ৬৮জনের। এরমধ্যে নুর নগরে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে মৃত্যু হয় ৫৫ জনের। এদের অনেকের মৃত্যুর আগে করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট পেয়েছিলো তাদের পরিবার। যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার আব্দুল মান্নান ও বাবু ইসলাম, বেনাপোল থানার আব্দুল লতিফ, খুলনা কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষিকা খুরশিদা জামান, সিটি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ খন্দকার আইনুল ইসলামসহ অনেকেই করোনা হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করলেও মৃত্যুর আগে তাদের করোনা টেষ্টের দ্বিতীয় নমুনা নেগেটিভ ছিলো। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর তাদের শরীরে ইন্টারনাল ড্যামেজ হওয়ার কারণে তারা করোনা নেগেটিভ হলেও সুস্থ হতে পারেননি।
এব্যাপারে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আরএমও ডাঃ মিজানুর রহমান খুলনা গেজেটকে বলেন, করোনাভাইরাস আক্রান্ত হলে শরীরের ভেতরে বিশেষ করে ফুসফুস, হার্ট, কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এজন্য প্রয়োজন করোনার চিকিৎসার পাশাপাশি শরীরের অন্য অঙ্গের সঠিক পরীক্ষা নীরিক্ষার মাধ্যমে চিকিৎসা করানো। এটা এতোদিন করোনা হাসপাতারে ব্যবস্থা না থাকলেও এখন তা ধীরে ধীরে শুরু হচ্ছে।
খুলনা গেজেট/এআইএন