কোথায় আছে দেশের আলোচিত শিল্পগ্রুপ এস আলমের বিলাসবহুল ১৪ কার ও জিপ? মার্সিডিঞ্জ বেঞ্জ, প্রাডো ও বিএমডব্লিউ ক্যাটাগরির এসব কার প্রথমদিকে নগরীর নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটি এলাকায় এস আলমের বাড়িতে থাকলেও ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানের পর কর্ণফুলী নদীর ওপারে মইজ্জ্যারটেকে এস আলমের কারখানায় নিয়ে রাখা হয়।
গত বৃহস্পতিবার রাতে এসব গাড়ি সেখান থেকে সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়। আর এই সরিয়ে নেয়ার পেছনে নেতৃত্ব দিয়েছেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক। তবে গাড়িয়ে সরিয়ে নেয়ার কথা অস্বীকার করেছেন এই দুই বিএনপি নেতা।
এস আলম গ্রুপের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পটিয়ায় পৌর এলাকায় অবস্থিত এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদের নির্মাণাধীন বাড়িতে হামলা চালায় একটি গ্রুপ। পরবর্তীতে স্থানীয়দের বাধায় তারা পিছু হটে। এ ঘটনার পর এস আলম গ্রুপ ভয় ও আতঙ্ক থেকে রাতের আধাঁরে গাড়িগুলো সরিয়ে ফেলে। আর এতে সহায়তা নেওয়া হয়েছে দক্ষিণ জেলা বিএনপির দুই নেতার।
একটি ভিডিওতে দেখা যায়, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক গাড়ি বের হওয়ার সময় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। একই এলাকায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের গাড়ির চালক মনসুর।
তবে এই গাড়ি সরিয়ে নেয়ার পেছনে নিজে জড়িত নয় বলে দাবি করেন বিএনপি নেতা আবু সুফিয়ান। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ঘটনাটি মইজ্জ্যারটেক এলাকায় নয়, কালুরঘাট বিসিক শিল্প এলাকার মীর গ্রুপের কারখানায়। কারখানায় বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে একটি গ্রুপ চাঁদা দাবি করছে বলে জানান আমাদের দক্ষিণ জেলা বিএনপি নেতা এনাম ভাই। এনাম ভাইয়ের মামাতো ভাই হলো মীর গ্রুপের চেয়ারম্যান মীর আবদুস সালাম। সেজন্য আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। এস আলমের গাড়ি কেন আমরা সরাতে যাব।’
একই মন্তব্য করেন বিএনপি নেতা এনামুল হক। তিনি বলেন,‘এস আলমের মাসুদ সাহেবের বেয়াই হলো মীর গ্রুপের আবদুস সালাম। আর আবদুস সালাম আর আমি হলাম মামাতো-ফুপাতো ভাই। বিএনপির নামে চাঁদাবাজি করছে জানানোর কারণে আমি আমাদের আরেক নেতা সুফিয়ান ভাইকে নিয়ে গিয়েছিলাম। এখানে এস আলমের গাড়ি বের করে নিয়ে যাওয়ার সাথে কোনো সম্পর্ক নেই।
দক্ষিণ জেলা বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, ‘বর্তমানে এস আলমের শুধু গাড়ি নয় যেকোনো সম্পদ ধরাও বিষের সমতুল্য। তাই এই গাড়ি কে নিতে যাবে?’
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গাজী গ্রুপের শিল্প কারখানায় আগুন দেওয়ার পর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে কারখানার মালিকদের মধ্যে চাপা আতঙ্ক বিরাজ করছে। এস আলম গ্রুপের একজন একজন কর্মকর্তা জানান, মূলত ওই ধরনের আতঙ্ক থেকে গাড়িগুলো সরিয়ে ফেলা হয়।