বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, “ডামি সরকারের গণবিরোধী নীতির কারণে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, পানির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, সব জিনিসের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।”
তিনি বলেন, “গ্রামে বিদ্যুৎ শুধু যায়, আসে না, কখন আসে তার কোনো ঠিক নাই। যারা গ্রামে ঈদ করতে গিয়েছিলেন, তারা এসে অনেকে বলেছেন, যতোটুকু আইপিএসের বিদ্যুতের ব্যাকআপ দরকার সেটুকুও পায় না। ১৫/২০ মিনিটের জন্য বিদ্যুৎ আসে আবার চলে যায়। ২/৩ ঘণ্টা পর আধা ঘণ্টার জন্য বিদ্যুৎ আসে তারপর আর খোঁজ পাওয়া যায় না। এই ঈদে ঢাকায় গ্যাসের অভাবে মানুষ রান্না করতে পারেনি। বাড়িতে বাড়িতে মাংস নষ্ট হয়ে গেছে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের অভাবে। ফ্রিজ চলে না বিদ্যুতের জন্য, গ্যাসের জন্য আগুন জ্বলে না। যে অহংকার করে প্রধানমন্ত্রী তার উন্নয়নের কথা বলেন, সে উন্নয়ন হলো কাগজ। থুতু দিয়ে জোড়া লাগানো হলে যেমন জোড়া লাগে না, ঠিক শেখ হাসিনার উন্নয়নও সেরকম। যার কারণে ধপাস করে শেখ হাসিনার উন্নয়ন পড়ে গেছে।”
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠন আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল শেষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে নয়াপল্টন থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে নাইটএঙ্গেল মোড় হয়ে আবার নয়াপল্টনে এসে শেষ হয়। এসময় ‘আমার মা জেলে কেন শেখ হাসিনা জবাব চাই, রুশ-ভারতের দালালরা হুঁশিয়ার সাবধান, গ্যাসের দাম বাড়ল কেন শেখ হাসিনা জবাব চাই, তেলের দাম বাড়ল কেন শেখ হাসিনা জবাব চাই, পানির দাম বাড়ল কেন শেখ হাসিনা জবাব চাই’ বলে নেতাকর্মীরা শ্লোগান দেয়।
বিএনপির মুখপাত্র আরও বলেন, “ওয়াসার পানি নোংরা ও কীটপতঙ্গে ভরা ময়লা পানি। এক বছর আগে জনগণ ওয়াসার এমডিকে ঘেরাও করেছিলেন। তাকে ওয়াসার পানি খেতে দেওয়া হয়েছিল, সে পানি ওয়াসার এমডি খায়নি। যে ব্যক্তি পানির দায়িত্বে তিনি যদি এই পানি না খান তাহলে সাধারণ মানুষ খাবে কেন?”
রিজভী বলেন, “তথাকথিত উন্নয়নের নামে প্রধানমন্ত্রী আপনি আপনার পরিবারকে আর ঘনিষ্ঠজনকে লুট করার সুযোগ দিয়েছেন। তারা মানুষের জমিজমা আর সম্পদ দখল করেছে। এরা সাধারণ গরিব মানুষের জায়গাজমি দখল করেছে। আজকের পত্রপত্রিকায় তা আসছে। আপনি বলেছেন, আপনি কাউকে ছাড়েন না। আপনি তো বেনজীরকে দেশ থেকে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন।”
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “বেনজীরের পরিবার দেশের ভেতরে এতো টাকা আর দেশের বাইরে কতো টাকা পাচার করেছে সেটা আমরা জানি না। একজন সরকারি কর্মকর্তার বেতন কতো? তার বেতন হয়তো ৮০/৯০ হাজার টাকা ছিল। তাহলে তার সন্তানদের নামে এতো ফ্ল্যাট, বাড়ি, জায়গাজমি কোথা থেকে হলো প্রধানমন্ত্রী? কারণ তথাকথিত উন্নয়নের নামে আপনি সুযোগ করে দিয়েছেন বেনজীরদেরকে এবং আপনার ঘনিষ্ঠজন ও দলীয় নেতাকর্মীদের।”
রিজভী আহমেদ আরও বলেন, “এতো পচা পানি সরবরাহের পরেও ৭% পানির দাম বাড়ানো হয়েছে।”
দলের নেতাকর্মীর উদ্দেশে রিজভী বলেন, “আজকে যে আওয়াজ তুলেছেন তা ন্যায়সঙ্গত। এটি জনগণের দাবি। আমরা জনগণের পক্ষে, আমরা ন্যায়ের পক্ষে, আমরা অবাধ মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে, যেগুলো শেখ হাসিনা কেড়ে নিয়েছেন। আপনাদের প্রতি আহ্বান, আমাদের রাজপথে আরো জোরালোভাবে নামতে হবে। আমাদের হয়তো গুলি করবে, গুম করবে ও ক্রসফায়ার দেবে, কিন্তু তবুও আমাদের মিছিল থামালে চলবে না যতক্ষণ না শেখ হাসিনার রাজসিংহাসন রাস্তায় উল্টে যায়।”
মিছিলে বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. রফিকূল ইসলাম, সহ-অর্থনৈতিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, তাঁতীদলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি ডা. জাহিদুল কবির, যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি জাকির হোসেন সিদ্দিকী, যুবদলের সাবেক সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন মামুন, ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক, যুবদলের সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান জুয়েল, বিএনপি নেতা ডা. তাজুল ইসলাম লোহানী, বিএনপি নেতা ইমতিয়াজ বকুল, জাকির হোসেন, সঞ্জয় দে রিপন, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি তৌহিদুর রহমান আউয়াল, মৎস্যজীবী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ওমর ফারুক পাটোয়ারি, কবির উদ্দিন মাস্টার, উত্তরের আহ্বায়ক আমির হোসেন, যাত্রাবাড়ী থানা বিএনপি নেতা শিপন খান, ঢাকা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন, ঢাকা মহানগর পূর্ব ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ জামাল চৌধুরী আদিত্য, সাব্বির আহমেদ, জাভেদ চৌধুরী, যুবদল নেতা খলিল মৃধা, কাজী মঞ্জুর রহমান, ছাত্রদল নেতা জাকারিয়া হোসেন ইমন, আশরাফুল আসাদ প্রমুখ অংশ নেন।
খুলনা গেজেট/এএজে