প্রকল্পের নাম গৃহহীনের জন্য ‘দুর্যোগ সহনীয় ঘর’। অথচ কোনো দুর্যোগ ছাড়াই নির্মাণের মাত্র তিন বছরের মাথায় ভেঙে পড়েছে সেই ঘর। শুধু তা-ই নয়, এই স্বপ্নের ঘরে চাপা পড়ে প্রাণ গেল এক বৃদ্ধার।
ঘটনাটি হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার মাদারিটুলা মহল্লার।
‘দুর্যোগ সহনীয় ঘর’-এর পিলার ভেঙে ৮৯ বছরের শিরাপজান বিবির মৃত্যু হয় শনিবার সন্ধ্যায়। তিনি মাদারিটুলা মহল্লার মৃত নেয়াম উল্লাহর স্ত্রী।
স্থানীয়রা জানান, নেয়াম উল্লাহর ছেলে শরিফ উল্লাহর জায়গা থাকলেও ঘর ছিল না। ২০১৯ সালে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) ও কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) কর্মসূচির বিশেষ বরাদ্দের অর্থে সারা দেশে এক লাখ ২৫ হাজার ঘর দেয় সরকার। এ সময় শরিফ উল্লাহ একটি বরাদ্দ পান।
শেষ বয়সে পাকা ঘর পেয়ে বেজায় খুশি ছিলেন শিরাপজান। কিন্তু কে জানত স্বপ্নের সেই ঘরে চাপা পরে প্রাণ যাবে তার।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জাহাঙ্গীর মিয়া বলেন, ‘শনিবার সন্ধ্যায় শিরাপজান বিবি ঘরের বারান্দার একটি পিলারের সঙ্গে হেলান দিয়ে চেয়ারে বসা ছিলেন। এ সময় হঠাৎ পিলারটি ভেঙে তার ওপর পড়ে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরিবারের লোকজন বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমরান হোসেন বলেন, ‘পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ নিতে তার ছেলে জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে একটি আবেদন করেছেন।’
বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পদ্মাসন সিংহ বলেন, ‘তিন বছর আগে নির্মাণ করা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দের একটি ঘরে বাস করতেন বৃদ্ধার পরিবার। তার মৃত্যুর ঘটনাটি আমরা একটি দুর্ঘটনা হিসেবে দেখছি। আপাতত উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতের দাফনের টাকা দেয়া হবে। পরবর্তী সময়ে ওই পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করা হবে।’
এ বিষয়ে শিরাপজান বিবির ছেলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।