উপজেলা নির্বাচন থেকে স্বজনদের সরে যাওয়ার বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, স্বজন বলতে প্রধানমন্ত্রী সুনির্দিষ্টভাবে সন্তান ও স্ত্রীকে বুঝিয়েছেন। যা গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ও রাতের সভায় তিনি (প্রধানমন্ত্রী) খোলাসা করেছেন।
আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানী ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভাপতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আমি যেসব বক্তব্য রেখেছি, অনেকে ভেবেছিলেন আমি নিজেই নিজের নামে বলে বেড়াচ্ছি। কিন্তু গতকাল নেত্রী নিজেই এ নিয়ে খোলাসা করে বলেছেন। স্বজন বলতে তিনি দুটো শব্দ উল্লেখ করেছেন- স্ত্রী ও সন্তান।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচনে এমপি-মন্ত্রীর স্বজনদের অনেকেই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে অনেকেই করেছেন। সবশেষ গোলাম দস্তগীরের ছেলে প্রত্যাহার করেছেন। সামনে আরও সময় আছে।’
উপজেলা নির্বাচনে নিজের ভাইয়ের প্রার্থী হওয়া নিয়েও সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘একটা প্রশ্ন হয়তো আপনারা করতে পারেন, আমার স্বজনও একজন প্রার্থী হয়েছেন, আমার নিজের উপজেলায়। সেখানে প্রশ্নটা হচ্ছে আমার এই প্রার্থিতার পেছনে সমর্থন আছে কি না, সম্মতি আছে কি না, আমি তার পক্ষে প্রশাসন বা নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছি কি না। সরেজমিনে সেটাই দেখার বিষয়। আমার দলের এর সঙ্গে কোনো সংযোগ নেই। নেতৃস্থানীয় কারও সমর্থন নেই। আমার সমর্থন তো প্রশ্নই ওঠে না। কাজেই আর এটা শেষ পর্যন্ত সরে যাবে না, এটাও বলা যায় না।’
সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘ব্যাপক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আমাদের দলের ৭৫তম রজতজয়ন্তী উদ্যাপন করব। সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় বিস্তারিত কর্মসূচি প্রণয়ন করব। এর মধ্যে ১৭ মে প্রধানমন্ত্রী, আমাদের সভাপতি শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষেও সারা দেশে সব পর্যায়ে কর্মসূচি পালন করব। সে ব্যাপারেও বিস্তারিত আলোচনা করব।’
এ সময় বিএনপির চেয়ারপারসনের বিদেশে চিকিৎসা প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বেগম জিয়া আটকে আছেন আইনের ফাঁদে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মামলায় তিনি বন্দি। বিএনপি নেতাদের উপেক্ষা এবং অবহেলার জন্য, হাজিরা বিলম্বিত করা। এক বছরে যেটা শেষ হতো সেটা ১০ বছর বিচার শেষ হয়নি। লিগাল ব্যাটেল করতেও তারা পারেনি। রাজপথেও তারা দেখার মতো কোনো মিছিল করতে ব্যর্থ হয়েছে। বরং বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার উদারতায় বেগম জিয়ার শাস্তি স্থগিত রেখে বাড়িতে থাকার সুযোগ করে দিয়েছেন। বাড়িতে বসেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। বিদেশ থেকেও চিকিৎসক এসে চিকিৎসা করাচ্ছেন।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা ইতিবাচক রাজনীতি করি। বিশেষ সংকটে যে প্রভাব প্রতিক্রিয়া বাংলাদেশেও সে প্রতিক্রিয়া থেকে জনগণ কি পরিত্রাণ দিতে এবং এ সংকট সাময়িক হলেও এ সংকট দূর করতে কিছু বাস্তবমুখী কর্মসূচি নিতে হবে। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে, বেকার সমস্যা দূরীকরণ এবং নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে দলকে সুসংগঠিত করতে নেত্রী দায়িত্ব দিয়েছেন এবং সেভাবে দলকে আমরা সাজিয়ে নিচ্ছি।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক ও এসএম কামাল হোসেনসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
খুলনা গেজেট/এনএম