সরকারকে বিব্রত করতে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের মৃত্যু ও ধর্ষণের গুজব ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই অভিযোগ করেন।
ড. মোমেন বলেন, ‘সাম্প্রতিক ধর্মীয় সহিংসতায় এখন পর্যন্ত মাত্র ছয়জন মারা গেছেন। নিহতদের মধ্যে চারজন মুসলমান। তারা হিন্দুদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের চেষ্টার সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন। হিন্দু সম্প্রদায়ের দুজন মারা গেছেন। এদের একজনের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে এবং অন্যজন পানিতে ডুবে মারা যান।’
‘কাউকে ধর্ষণ করা হয়নি এবং একটি মন্দিরেও অগ্নিসংযোগ বা ধ্বংস করা হয়নি। তবে কিছু প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে। সব অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং এখন তারা পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আগুনে পুড়ে যাওয়া ঘরগুলো পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত সবাই ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন।
ড. মোমেন বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত, কিছু উত্সাহী মিডিয়া এবং ব্যক্তি ধর্মীয় সম্প্রীতির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ শেখ হাসিনা সরকারকে বিব্রত করার জন্য মূলত ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মৃত্যু এবং ধর্ষণের গল্প ছড়াচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রতিটি পূজামণ্ডপের জন্য সরকার অর্থ প্রদান করে আসছে এবং সার্বক্ষণিক পুলিশ পাহারার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।’
‘এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে আয়োজকদের উচিত তাদের মণ্ডপগুলোকে অযত্নে না রাখা’- মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, ‘পূজামণ্ডপে কোনো উপাসক বা আয়োজক না থাকা অবস্থায় একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তি পবিত্র কোরআনের একটি কপি একটি মূর্তির পায়ের কাছে রেখে যায় এবং অন্য একজন তার একটি ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করে দেয়।’
‘এটি ক্ষোভের জন্ম দেয়; যা ভাঙচুর এবং লুটপাটের দিকে নিয়ে যায়’, যোগ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
কুমিল্লা শহরে নানুয়া দীঘির পাড়ে একটি পূজামণ্ডপে কোরআন অবমাননার কথিত অভিযোগে গত ১৩ অক্টোবর ওই শহরে মন্দির ও হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হয়েছিল। ওই ঘটনার জের ধরে পরে চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনীসহ কয়েকটি জেলায়ও হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হয়। নোয়াখালীতে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া চাঁদপুরে মন্দিরে হামলাকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে কয়েকজন নিহত হন।
সিসি ফুটেজ দেখে কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ রাখার ঘটনায় প্রধান সন্দেভাজন ইকবাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত ২১ অক্টোবর রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার সৈকত এলাকার সুগন্ধা পয়েন্ট থেকে ইকবালকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি এখন রিমান্ডে রয়েছেন। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন জায়গায় সাম্প্রদায়িক হামলার অভিযোগে বেশকিছু দুর্বৃত্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/ এস আই