বীরভূমের বালি খাদানের দুর্নীতি নিয়ে লাগাতার খবর করতেন এই সাংবাদিক। বালির চোরাচালানে যুক্ত ক্ষমতার অলিন্দে থাকা হেভিওয়েট কিংবা প্রভাবশালী কেউ রক্ষা পায়নি এই সাংবাদিকের কলম থেকে। বিপত্তি তৈরি হল সম্প্রতি।
বালি মাফিয়াদের কাছ থেকে নির্বিবাদে তোলা তোলে একশ্রেণীর পুলিশ। তোলা তোলার সময়ই পুলিশের গাড়ির চাকার তলায় পড়ে প্রাণ যায় এক বালি মাফিয়ার সহকারীর। নিছক দুর্ঘটনা হিসেবে ঘটনাটিকে চালানো যেত। কিন্তু এই সাংবাদিক অন্তর্তদন্ত করে ঘটনার মূলে পৌঁছালেন। পুলিশের সঙ্গে বালি মাফিয়াদের যোগাযোগের খবর প্রকাশিত হল।
নিট ফল, এই সাংবাদিককে পুলিশের চারবার জেরা এবং সাংবাদিকের তিন বার আগাম জামিন নেওয়া। পুলিশের অত্যাচারে জর্জরিত সাংবাদিক কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন।
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিবেক চৌধুরী ও সৌমেন সেন এর ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলায় এক যুগান্তকারী রায় দিল। ডিভিশন বেঞ্চ তাদের পর্যবেক্ষণে বলেছে, সত্য প্রকাশ করাটা সাংবাদিকের মৌলিক অধিকার। সাংবাদিক দুর্নীতির মুখোশ খোলেন। এতদ্বারা জনসাধারণ সচেতন হয়, প্রশাসন দুর্নীতি রুখে দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে পারে। সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধ করা যায়না।
তবে যদি সাংবাদিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে কিছু প্রকাশ করেন তাহলে তিনিও অপরাধী। তবে বর্তমান মামলার যৌক্তিকতা সম্পর্কে বিচারপতিরা নিঃসংশয়। কারণ বালি মাফিয়াদের সঙ্গে একশ্রেণীর পুলিশ ও রাজনৈতিক নেতাদের যোগসাজস থাকার কথা সবাই জানে। ডিভিশন বেঞ্চ বীরভূমের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছে সাংবাদিককে কোন প্রেক্ষিতে জিজ্ঞাসাবাদ এবং আগাম জামিন নিতে বাধ্য করা হয়েছে সেই সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে একটি রিপোর্ট আদালতে পেশ করতে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।