সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের খুলনার সক্রিয় কর্মী আবু হাসানের জানাযা শেষে তার গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরার দেবহাটা থানার সাতবোশ গ্রামে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) রাত ১১ টায় ফুলবাড়িগেটস্থ খানা বাড়ী বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গনে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাযায় অংশ নেয় খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)’র ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ মাছুদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. শেখ শরিফুল আলম(পিএইচডি), খুলনা মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ, খানজাহান আলী থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ হাওলাদার আব্বাস, মহানগর জামায়াত নেতা মো. আজিজুর রহমান স্বপন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি (বিএল কলেজ), খুলনা মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিনহাজুল আবেদীন (খুবি),আহম্মদ হামীম রাহাত, আল শাহরিয়ার (খুবি), ওমর ফারুক (কুয়েট), মো. জাহিদুল ইসলাম(কুয়েট), মিরাজুল ইসলাম ইমন(একেসিসি), নাঈম ইসলাম(সুন্দরবন কলেজ), সাইদ ইসলাম রাজু(রূপসা কলেজ), হৃদয়(বিএলসি), মো. অলভি(বিএলসি),মো. জিহাদ(সুন্দরবন কলেজ), মো.ছাকিব রহমান (খানজাহান আলী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মহাবিদ্যালয় ), আরিফ (বিএলসি), বনি, মো. বিল্লাল হোসেন (টিটি কলেজ), কুয়েটের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ, কুয়েটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. গোলাম কিবরিয়া, খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ম্যানেজার (এডমিন এন্ড এইচ,আর) মো. হামিদুল ইসলাম খান, ইউপি সদস্য জিএম এনামুল কবির, খানজাহান আলী আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ আবু দাউদ, খানাবাড়ী যুব সংঘ ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক তৈয়বুর রহমান লিটন, ছাত্রদল নেতা মশিউর রহমানসহ খুলনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন শ্রেনী পেশার শতশত মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
জানাজার ইমামতি করেন খানাবাড়ী রহমানিয়া তালীমুল কুরআন মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতি আব্দুর রহমান।
জানাযা শেষে রাতেই আবু হাসানের মরদেহ তার গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। ১১ ডিসেম্বর ভোর ৪ টায় সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটা থানার সাতবোশ গ্রামে মরহুমের নানা বাড়ীর উঠানে মরহুম আবু হাসানের দ্বিতীয় জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। পরে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র জনতার আন্দোলনে খুলনার যে সকল ছাত্র বিশেষ ভূমিকা রাখেন তাদের মধ্যে আবু হাসান ছিল অন্যতম। আবু হাসান জুলাই আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখযোদ্ধা হিসাবে যেমনিভাবে কাজ করেছেন, ঠিক তেমনিভাবে ছাত্র জনতাকে ঐক্যবদ্ধ করে রাজপথে বুলেটের মুখে লড়াই করে টিকে থাকতে সাহস যুগিয়েছে।
জানাযায় অংশ নিয়ে হাসানের স্মৃতিচার করতে গিয়ে বক্তারা বলেন, আবু হাসান ছিল একজন কুরআনের হাফেজ এবং কলেজের মেধাবী শিক্ষার্থী। হাসান তার কাজের মধ্যে দিয়ে সর্বস্থরের মানুষের মাঝে চির স্মরনিয় হয়ে থাকবে। নেতৃবৃন্দ হাসানের অসহায় পরিবারের পাশে থেকে সার্বিক সহযোগিতা করার ঘোষণা দেন। একই সাথে তার আত্মার মাগফেরাত কামনায় সকলকে দোয়া করার আহবান জানান।
উল্লেখ্য খুলনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতা আবু হাসান গত ২৯ নভেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি প্রোগ্রাম শেষ কর ফুলবাড়ীগেটস্থ খানাবাড়ী বাড়ীতে ফেরার পথে এক মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়। দীর্ঘ ১২ দিন খুলনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জালড়ে গত ১০ই ডিসেম্বর বেলা সোয়া ৫ টায় সে মৃত্যুবরণ করেন।
খুলনা গেজেট/এএজে