শ্রীলঙ্কায় চলমান সংকটময় পরিস্থিতি সামাল দিতে সর্বদলীয় সরকার গঠনের জন্য বিরোধীদলগুলোকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে। এরই মধ্যে রাজাপাকসের সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে বিরোধীদলগুলো। সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
শ্রীলঙ্কায় সরকারের বিরুদ্ধে চলছে আন্দোলন। এর আগে দেশটিতে জারি করা কারফিউ উপেক্ষা করে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে জনগণ। বিরোধীরাও সে বিক্ষোভে যোগ দেয়। তুমুল জনরোষের মুখে শ্রীলঙ্কা সরকারের ২৬ মন্ত্রী পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এর পরেই ‘সর্বদলীয় সরকারের’ প্রস্তাব আসে গোটাবায়া রাজাপাকসের পক্ষ থেকে।
শ্রীলঙ্কার বৃহত্তম বিরোধী রাজনৈতিক জোট ইউনাইটেড পিপলস পাওয়ার বা সামাগি জানা বালাওয়েগায়া (এসজেবি) গতকাল সোমবার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করে।
এসজেবির শীর্ষ নেতা রঞ্জিত মাদুমা বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) বলেন, ‘এ দেশের মানুষ চায়, গোটাবায়া এবং তাঁর পুরো রাজাপাকসে-পরিবার ক্ষমতা ছাড়ুক। এ ছাড়া আমরা জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যেতে এবং দুর্নীতিবাজদের সঙ্গে কাজ করতে পারি না।’
কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে শ্রীলংকা। দক্ষিণ এশিয়ার এ দ্বীপরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক সংকট চরমে পৌঁছেছে। এর জেরে সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছে জনগণ। পরিস্থিতি সামাল দিতে কারফিউ জারি করেও লাভ হয়নি। কারফিউ অমান্য করে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছে সাধারণ মানুষ। বিরোধীরাও সে বিক্ষোভে সামিল হয়।
এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপরও জারি করা হয় নিষেধাজ্ঞা। তবে, নিষেধাজ্ঞা জারির ১৩ ঘণ্টা পর তা প্রত্যাহার করা হয়।
বেশ কিছু দিন ধরেই প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগের দাবিতে তাঁর বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ করেছে জনসাধারণ। সে বিক্ষোভ সহিংস রূপও নিয়েছে। প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ‘গোটা গো হোম’ (গোটাবায়া বাড়ি যাও)-সহ নানা ধরনের হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট হচ্ছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে ‘ভুয়া খবর’ ছড়ানো হচ্ছে, এমন দাবি করে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার, ইউটিউবসহ সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় শ্রীলঙ্কায়। এর বিরুদ্ধে সরব হন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের ছেলে এবং মন্ত্রিসভার সদস্য নামাল রাজাপাকসে। তিনি নিজেও গতরাতে পদত্যাগ করেন।
খুলনা গেজেট/ এস আই