প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের পলায়নের পর সর্বদলীয় সরকার গঠনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে শ্রীলঙ্কায়। তার অংশ হিসেবে আগামী ২০ জুলাই হবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। বুধবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টের স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেবর্ধনে।
বিবৃতিতে স্পিকার বলেন, ‘আজ (১৩ জুলাই) পার্লামেন্টের সব রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে ক্ষমতাসীন দল জানিয়েছে, সর্বদলীয় সরকার গঠনে প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদের সব সদস্য পদত্যাগ করতে প্রস্তুত।’
‘সংবিধান অনুযায়ী, এখন সর্বদলীয় সরকার গঠনের পথে চলতে হবে আমাদের। তারই অংশ হিসেবে আগামী ২০ জুলাই প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে।’ বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বিক্ষোভকারীদের হামলার পর এই বিবৃতি দেন স্পিকার।
১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ আর্থিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা। বর্তমানে দেশটিতে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ বলতে আর কিছুই নেই। ফলে ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ অধ্যুষিত শ্রীলঙ্কা খাবার, ওষুধ, জ্বালানির মতো অতি জরুরি আমদানিও করতে পারছে না।
বর্তমান এই দুরাবস্থার জন্য দেশটির অধিকাংশ মানুষ প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে এবং তার বড়ভাই ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের নেতৃত্বাধীন সরকারকে দায়ী করে তাদের পদত্যাগের দাবিতে গত মার্চ থেকেই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শ্রীলঙ্কার সাধারণ জনগণ।
বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার কথা ছিল গোতাবায়া রাজাপাকসের। কিন্তু বিক্ষুব্ধ জনতার রোষ থেকে বাঁচতে গত ৮ জুলাই সামরিক বাহিনীর ঘাঁটিতে আশ্রয় নেওয়া গোতাবায়া মঙ্গলবার মধ্যরাতে বাহিনীর একটি বিমানে সস্ত্রীক মালদ্বীপে পালিয়ে যান।
তার পালিয়ে যাওয়ার খবর চাউর হওয়ার পর সকালে প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহের পদত্যাগের দাবিতে তার সরকারি কার্যালয়ে হামলা চালায় বিক্ষোভকারীরা। সেখানে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘাতও হয়।
এই হামলার মধ্যেই টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে নিজেকে শ্রীলঙ্কার অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন রনিল বিক্রমাসিংহে এবং রাজধানী কলম্বোতে কারফিউসহ গোটা দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন।
ভাষণে শ্রীলঙ্কার অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, দেশে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সেনাবাহিনী ও পুলিশকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
খুলনা গেজেট/এমএম