সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়ন তোফাজ্জল বিদ্যাপীঠে অর্ধ কোটি টাকায় চার জনকে নিয়োগ দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্বে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ সদস্যদের যোগসাজশে পূর্ব নির্ধারিত চার প্রার্থীর কাছ থেকে ৫১ লাখ টাকা নিয়ে তাদের নিয়োগ দিতে প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে বলে অভিযোগ। শনিবার (১২ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত হচ্ছে সেই পাতানো নিয়োগ বোর্ড।
মনোননীত প্রার্থীরা কৃষি জমি বিক্রি করে সোনার হরিণ চাকরির জন্য টাকা প্রধান শিক্ষকের হাতে উঠিয়ে দিচ্ছে বলে জানা গেছে।
এঘটনায় মোঃ কওছার আলী নামের এক প্রতিবন্ধী তরুণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অভিযোগ নিস্পত্তি কর্মকর্তা বরাবর লিখিত আবেদন করেছে। সরকারি জরুরী সেবা জিআরএস এর মাধ্যমে প্রেরিত অভিযোগে পাতানো বোর্ডের কার্যক্রম স্থগিতসহ টাকার বিনিময়ে হলেও যোগ্যদের নিয়োগ দেয়ার দাবি জানান তিনি।
কওছার আলী জানান, গত ৬ জুলাই তোফাজ্জল বিদ্যাপীঠে অফিস সহায়কসহ পরিচ্ছন্নতাকর্মী, নিরাপত্তাকর্মী ও আয়াপদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। এসময় বিজ্ঞপ্তির শর্ত মেনে এক হাজার টাকার ব্যাংক ড্রাফট করে আরও কয়েজনের সাথে তিনি অফিস সহায়ক পদে আবেদন করেন। শারীরিক প্রতিবন্ধী ঐ তরুণের অভিযোগ ১২ নভেম্বর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার আগেই চারটি পদের জন্য প্রার্থীদের মনোনীত করেছে কর্তৃপক্ষ। অফিস সহায়ক পদে ১৫ লাখ এবং অপর তিনটি পদে ১২ লাখ করে টাকা নিয়ে যথাক্রমে শাজাহান হোসেন, মহিন্দ্র মন্ডল, ওয়ালীউল্লাহ এবং নিলীমা রানী মন্ডলকে নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তিনি আরো জানান, প্রার্থী চুড়ান্ত করে শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতার জন্য শনিবার পাতানো নিয়োগ বোর্ডের জন্য বুধবার তাদের অনুকুলে প্রবেশপত্র সরবরাহ করায় আলেয়া, সবুজসহ তারা অন্তত ১০জন প্রবেশপত্র গ্রহণ করেনি। পাতানো বোর্ডের মাধ্যমে অস্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ করে সমপরিমান টাকা নিয়ে যোগ্যদের এসব পদে চাকরির জন্য মনোনীত করার দাবি জানান তিনি।
এবিষয়ে প্রধান শিক্ষক মতিউর রহমান জানান, টাকাকড়ি লেনদেনের বিষয়ে তার কিছু জানা নেই। পরিচালনা পরিষদের পরামর্শে তিনি নিয়োগ বোর্ডের ব্যবস্থা করেছেন। প্রার্থী চুড়ান্ত হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি দাবি করেন, ‘পরীক্ষায় ভাল করলে তারা মনোনীত হবে আর সেটাই স্বাভাবিক”।
সভাপতি শেখ আল মামুন জানান, প্রধান শিক্ষক নিয়োগের যাবতীয় বিষয়ে দেখাশুনা করছে। আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে নিয়োগের অভিযোগ সত্য নয় বলেও তিনি জানান।
শ্যামনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নুর মোহাম্মদ তেজারত জানান, এমন বিষয়ে তার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, যেখানে অভিযোগ হয়েছে বিষয়টি তারা দেখবে।