সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের ভামিয়া এলাকায় খোলপেটুয়া নদীর উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধের একটি অংশ দেবে গিয়ে বাঁধের মাঝখানে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। দু’দিন ধরে একটু করে ফাটল দেখা দেয়ার পর শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) বিকালে হঠাৎ করে বাঁধের একটি অংশ দেবে যাওয়ায় এলাকা জুড়ে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। যে কোন মুহুর্তে ওই বাঁধ ভেঙ্গে নদীর লোনা পানিতে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে যেতে পারে বলে আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-১ এর আওতাধীন পাঁচ নম্বর পোল্ডারের আওতাভুক্ত শ্যামনগরের ভামিয়া এলাকায় উপকূল রক্ষা বাঁধে হঠাৎ করে ফাটল দেখা দেয়। দু’দিন ধরে একটু করে ফাটল দেখা দেয়ার পর শুক্রবার বিকালে আকস্মিকভাবে বাঁধের একটি বড় অংশ দেবে যায়।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় তিন দশক আগে কারিতাসের উদ্যোগে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের ভাময়িা এলাকায় একটি স্লুইচগেট নির্মাণ করা হয়। স্লুইচগেটটি ভাঙন মুখে থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন মেরামত না করায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে দেবে যাওয়া বাঁধের মধ্যে থাকা স্লুইচগেট সংস্কার করা না হলে তৎসংলগ্ন এলাকার প্রায় সাতশ’ বিঘা জমির চিংড়ি চাষ বন্ধ হয়ে যাবে বলে দাবি স্থানীয়দের। এছাড়া খোলপেটুয়া নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলে দেবে যাওয়া অংশের ভাঙন আরো বড় আকার নিয়ে বিস্তীর্ণ এলাকাকে প্লাবিত করার শংকা রয়েছে। যদিও পানি উন্নয়ন বোর্ডের দাবি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য ভামিয়া গ্রামের বাসিন্দা ডালিম কুমার ঘরামী জানান, গত বুধবার থেকে ভামিয়া এলাকার পাউবো’র বেড়িবাঁধের ওই অংশ একটু একটু করে নিচু হতে থাকে। টানা দু’দিন একটু একটু করে নিচু হওয়ার এক পর্যায়ে শুক্রবার বিকালে সেখানে ব্যাপক গর্তের সৃষ্টি হয়। বাঁধের দেবে যাওয়া অংশে থাকা স্লুইচগেটের মধ্যভাগের মাটি সরে যাওয়ায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
স্থানীয় বুড়িগোয়ালীনি ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ জানান, তিন দশকের পুরানো স্লুইচগেট দীর্ঘদিনেও সংষ্কার করা হয়নি। সেখানকার রক্ষনাবেক্ষণ ব্যবস্থায় ব্যাপক গাফিলতি থাকার কারণে হঠাৎ স্লুইচগেটের মধ্যকার মাটি সরে যেয়ে বাঁধ দেবে গেছে।
তিনি আরও বলেন, নদীতে পানির চাপ না থাকায় আপাতত দেবে যাওয়া অংশ দিয়ে নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশের ঝুঁকি নেই। তবে আকস্মিক নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলে দেবে যাওয়া অংশের স্লুইচগেটসহ পার্শ্বস্থ বিশাল অংশের বাঁধ নদীতে বিলীন হওয়ার আশংকা রয়েছে। তিনি দ্রুত এটি সংষ্কারের দাবি জানান।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডে বিভাগ-১ এর উপসহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন জানান, বিষয়টি তারা স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়েছেন। শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ সংস্কারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
খুলনা গেজেট/এনএম