সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে অক্সিজেন না থাকায় মুনসুর আলম গাজী (৬২) নামের এক ব্যক্তির মুত্যর অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে এ ঘটনা ঘটে।
মৃত্যুবরণকারী মুনসুর আলম সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ঈশ্বরীপুর গ্রামের মৃত মোহর আলী গাজীর ছেলে। মৃতের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, অসুস্থ মনসুর আলম শ্বাসকষ্টে ভুগতে থাকায় শুক্রবার বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে তাকে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে নেয়া হয়। এসময় প্রয়োজনীয় মুহুর্তে তাকে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়নি। বরং সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও তার সহকারীগণ জরুরী বিভাগের জন্য বরাদ্দের তিনটি সিলিন্ডার অন্য রোগীর ক্ষেত্রে আগে ব্যবহারের ফলে ইতিমধ্যে তা শেষ হয়ে যাওয়ার কথা তাদেরকে জানান।
মৃতের ছেলে মেহেদী হাসান জানান, শুক্রবার বিকালে বাড়িতে অবস্থানকালে তার পিতার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এসময় বাড়িতে থাকা অক্সিজেন লাগিয়ে এ্যাম্বুলেন্সযোগে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে নেয়া হয়।
তিনি আরও জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে নেয়ার পর সেখানে মেশিনের সহায়তায় তার পিতাকে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়। কয়েক মিনিটের মধ্যে বিদ্যুৎ চলে গেলে তার পিতা তীব্র দমের কষ্টে ভুগতে থাকে। এসময় সিলিন্ডারের অক্সিজেন দেয়ার অুনরোধ করা হলে সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক শিরুজ্জামান ও তার সহকারীরা জরুরী বিভাগে সিলিন্ডার না থাকার কথা জানায়। এসময় তারা অনেক অনুনয় বিনয় করার প্রায় ৩০ মিনিট পর একটি সিলিন্ডার আনা হলেও সেটা সংযুক্ত করার আগেই তার পিতার মৃত্যু হয়।
তিনি অভিযোগ করেন বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে কর্তব্যরতরা তার পিতার চিকিৎসায় চরম গাফিলতি ও অবহেলা করেছেন। রোগীর অবস্থাকে গুরুত্ব না দেয়ায় তারা সময়মত অক্সিজেন সরবরাহ করতে না পারায় তার পিতার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্তপুর্বক সেখানে কর্মরতদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ শিরুজ্জামান বলেন, জরুরী বিভাগে নেয়ার পর মেশিনের সহায়তায় অক্সিজেন দেয়া হয়। তবে হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় মেশিন কাজ না করায় একটু সমস্যার তৈরী হয়। একই সময়ে বৃষ্টি শুরু হলে ওয়ার্ড থেকে অক্সিজেন আনতে যেয়ে কিছুটা দেরী হলেও মারা যাওয়ার আগে ওই রোগীকে অক্সিজেন সংযোগ দেয়া হয়। রোগীর অবস্থা খারাপ ছিল দাবি করে তিনি আরো বলেন, হেমোরোজিক স্ট্রোকের ঐ রোগীকে ইতিপুর্বে একাধিকবার সাতক্ষীরা নেয়া হয়েছিল।
শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ জিয়াউর রহমান বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অক্সিজেনের কোন অভাব নেই। কনসেনট্রেটর এর মাধ্যমে রোগীকে অক্সিজেন সরবরাহ করা হলেও বিষয়টি বুঝতে না পেরে রোগীর স্বজনরা ভুল অভিযোগ করছেন। তবু বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলেও তিনি জানান।
খুলনা গেজেট/ টিএ