খুলনা, বাংলাদেশ | ১৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  আগরতলায় সহকারী হাইকমিশনে হামলায় ৩ পুলিশ বরখাস্ত, গ্রেপ্তার ৭
  ভারতীয় সব বাংলা চ্যানেল সম্প্রচার বন্ধ চেয়ে করা রিটের শুনানি বুধবার

শেখ মুজিবের বাঙলা বিজয়

অসীম কুমার সরকার

১৬ ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবস। এ বিজয় বাঙালির রক্তস্নাত বিজয়। এ বিজয় সাড়ে সাত কোটি নির্যাতিত, নিপীড়িত, মুক্তিকামী বাঙালির বিজয়। এ বিজয় তিরিশ লক্ষ শহিদের রক্তে রঞ্জিত, দুই লক্ষ মা বোনের ত্যাগ, তিতিক্ষা এবং সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত বাঙালি জাতির মুক্তির বারতা। দীর্ঘ নয় মাস সশস্ত্র সংগ্রাম করে তিরিশ লক্ষ প্রাণ আর এক সাগর রক্তের বিনিময়ে এই দিনে বীর বাঙালি ছিনিয়ে আনে বিজয়ের লাল সূর্য। রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে এই দিনে তৎকালিন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) মুক্তিকামী মানুষের কাছে ৯১ হাজার ৫৪৯ জন পাকিস্তানি সৈন্য প্রকাশ্যে আত্মসমর্পন করেছিল। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পক্ষে লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমির আব্দুল্লাহ খান নিয়াজী এবং বাংলাদেশের পক্ষে মিত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা আত্মসমর্পনের দলিলে স্বাক্ষর করেছিলেন। আর তখনই পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ নামের নতুন রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। এই আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে দুই যুগের পাকিস্তানি শোষণ ও বঞ্চনার অবসান ঘটে এবং পাকিস্তানি শাসকের নির্যাতন ও নিষ্পেষণের কবল থেকে চিরতরে মুক্ত হয় বাঙালি জাতি। তাই ১৬ ডিসেম্বর কোটি বাঙালির আত্মনিবেদন ও সংগ্রামে গৌরব গাঁথা এক অবিস্মরণীয় দিন। আর যে মহান নেতা এই বিজয়কে স্বার্থক করেছিলেন তিনি হলেন বাঙালি ও বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তান , সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতা যুদ্ধের মহানায়ক, বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁরই নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের স্ফুলিঙ্গে উজ্জিবিত সশস্ত্র জনযুদ্ধের মধ্য দিয়ে এই দিনে অর্জিত হয় বাঙালি জাতির মুক্তির ইতিহাস।

বাংলাদেশ নামক ভূখন্ডের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহাকুমার (বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলা) টুঙ্গিপাড়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে শেখ বংশে জন্মগ্রহণ করেন। ছোট থেকেই তিনি ছিলেন চঞ্চল, দূরন্ত, বিদ্রোহীমনা ও অসীম সাহসী। তিনি ছিলেন নিরহংকার, অনাড়ম্বর, দয়ালু ও মহানুভব। ছিলেন মানবতার এক মূর্ত প্রতীক। মানুষের দুঃখ দুর্দশায় তিনি বিচলিত হয়ে উঠতেন। দুঃখে তাঁর প্রাণ কেঁদে উঠত। সারাটা জীবন তিনি দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য সংগ্রাম করে গেছেন। নিজের দুঃখ কষ্টকে তুচ্ছ করে দেশের স্বাধীনতার জন্য, এই মা মাটি ও মানুষের মঙ্গলের জন্য দিনের পর দিন জেল খেটেছেন। তাঁর জন্ম না হলে কোনদিন বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না।

এ কথা কি ভাবা যায় নাকি কল্পনা করা যায়? বাংলা ও বাঙালির মুক্তির নেশায় একজন মানুষ যিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ ও দেশের মানুষের ভালোবাসায় কতটা আপ্লূত হলে তাঁর রাজনৈতিক জীবনে ৪ হাজার ৬৮২ দিন কারাভোগ করেন! ব্রিটিশ আমলে শুধু ৭ দিন বিদ্যালয়ের ছাত্র থাকা অবস্থায় কারাভোগ করেছিলেন। বাকি ৪ হাজার ৬৭৫ দিন তিনি কারাভোগ করেন পাকিস্তান সরকারের আমলে। ভেবে দেখুন বঙ্গবন্ধুর জীবন কাহিনি। জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় যৌবন এবং তা কেটেছে তাঁর কারগারে। প্রিয়তমা স্ত্রী, মা-বাবা, ভাই-বোন, ছেলে-মেয়ে, আত্মীয়-স্বজনদের মায়ার বন্ধন থেকে তাঁকে দূরে থাকতে হয়েছে। নিজ জীবনের সকল প্রকার সুখ, স¦াচ্ছন্দ্য,সাদ-আহলাদ বিসর্জন দিয়ে তাকে নির্জন কারাগারের নিঃসঙ্গ সেলে দুর্বিষহ যন্ত্রণাকাতুর জীবন কাটাতে হয়েছে। দিনের পর দিন সহ্য করতে হয়েছে পাকিস্তানি শাসকের অত্যাচার, নির্যাতন ও জুলুম। বাঙালি জাতির জন্য তিনি নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন। যে কোনো ধরনের কষ্ট এমনকি মৃত্যুও ছিল তাঁর জন্য স্বাভাবিক। তাই বার বার ফাসির মঞ্চে যেয়েও তিনি বাঙালির জয়গান গেয়েছেন। মৃত্যু অবধারিত জেনেও তিনি কখনও বিন্দুমাত্র বিচলিত হননি। বরং তিনি বলেছিলেন, আমাকে ফাঁসি দাও, আমি কখনও ভীত নই। তবে আমার শেষ ইচ্ছা- আমার লাশটা বাংলার মাটিতে পৌঁছে দিও।
কীভাবে পেলাম আজকের বিজয় দিবস? কী তার ইতিহাস? পলাশীর প্রান্তরে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হওয়ার পর দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের পথ বেয়ে উপমহাদেশের জনগণ পেয়েছিল পাকিস্তান ও ভারত নামক দুটি রাষ্ট্র। এরপর শুরু হয় পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক বাঙালিদের নতুন করে শোষণ ও পরাধীনতার শৃঙ্খলে বেঁধে রাখার ষড়যন্ত্র। প্রথমেই তারা ফন্দি আঁটে কীভাবে এদেশের মানুষের মুখের ভাষাকে কেড়ে নেওয়া যায়। বাঙালিদের বশে রাখার জন্য তারা বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং বাঙালির ঘাড়ে পাকিস্তানি সংস্কৃতি চাপিয়ে দেওয়ার নীল নকশা তৈরি করে। পাকিস্তানের কোনো অংশেই উর্দু ভাষা স্থানীয় ভাষা না হওয়া সত্তে¡ও ১৯৪৭ সালে করাচিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় শিক্ষা সম্মেলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণাপত্রে উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ব্যবহারের সুপারিশসহ প্রচার মাধ্যম ও বিদ্যালয়ে কেবল উর্দু ভাষা ব্যবহারের প্রস্তাব করা হয়। ১৯৪৭ সালের ডিসেম্বরের শেষের দিকে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার সমর্থনে প্রথম রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে বাংলাভাষা দাবির পক্ষে স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানে অংশগ্রহণ করেন।

১৯৪৮ সালের ২১ শে মার্চ রেচকোর্স ময়দানে পাকিস্তানের স্থপতি ও গভর্নর জেনারেল মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ দ্ব্যর্থহীন চিত্তে ঘোষণা করেন-“ উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা, অন্য কোনো ভাষা নয়।” মুহাম্মদ আলী জিন্নহ্ এ বিরূপ মন্তব্যে উপস্থিত ছাত্র জনতার একাংশ তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। ভাষার দাবিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বার বার গ্রেপ্তার হন এবং কারাভোগ করেন। ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধুর অনুসারী বাংলার দামাল ছেলে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ নাম না জানা অনেকে বুলেটের আঘাতে রাজপথ রঞ্জিত করা বাঙালির মুখের ভাষা তথা মাতৃভাষা রক্ষার্থে প্রাণের আহুতি দিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিল তখন জেল হাজতে। কারাগারের নির্যাতনের কঠিন সেলে বসে তিনি মাতৃভাষা রক্ষার্থে, পশ্চিম পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর থেকে বাংলার মানুষের মুক্তির চেতনায় নির্বাক ছিলেন। ভাষার দাবিতে বিদ্রোহী প্রতিবাদী বাংলার দামাল ছেলেদের খোঁজ খবর জানতে তাঁর মন ব্যাকুলতায় অস্থির ছিল। কারাগারের নির্দয় নিষ্ঠুর কঠিন সেলে বসে নিভৃতে চোখের পানি ফেলা আর মুক্তির প্রহন গণনা ছাড়া তারঁ যে কোনো পথ ছিল না।

সেদিন ছাত্র সমাজের প্রতিবাদী কন্ঠে ধ্বনিত হয় স্বাধিকারের দাবি। বুকের তাজা রক্ত দিয়ে তারা লিখে যায় এক অনন্য ইতিহাস। তাদের নিসৃত রক্তে লেখা হয়ে যায় পূর্ব বাংলার অমোঘ ভাগ্যলিপি। তাদের এ মহান আত্মত্যাগের ফলেই বাংলা ভাষা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা লাভ করে। এরপর ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতিকে মুক্তির মহামন্ত্রে উজ্জিবিত করে ধাপে ধাপে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পথে এগিয়ে নিয়ে যান বাঙালিদের। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ৫২ এর ভাষা আন্দোলনের পর ৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে জয়লাভ, বাঙালির মুক্তির সনদ ৬৬ এর ছয় দফা আন্দোলন, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০ এর ঐতিহাসিক সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জন, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেচকোর্স ময়দানে তাঁর কালজয়ী ঐতিহাসিক ভাষণ ও পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন প্রভৃত ঘটনা প্রবাহের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জনের চুড়ান্ত লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওঠে বাঙালি জাতি।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে ১৯৭১ সালের মার্চ মাস ছিল সবচেয়ে উত্তাল ঘটনাবহুল মাস। ১৯৭১ সালের ১ মার্চ হঠাৎ এক হটকারী সিদ্ধান্তে পাকিস্তানের তৎকালিন স্বৈরশাসক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান জাতীয় পরিষদের অধিবেসন অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত করলে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে বাংলার আপামর জনতা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তখন অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন । ডাক দেন সারা দেশে হরতাল পালনের। ২ রা মার্চ পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠী ঢাকায় সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত অনির্দিষ্ট কালের জন্য কারফিউ জারি করে। বিক্ষুব্ধ বাঙালি জাতি কারফিউ ভেঙে বিভিন্ন স্থানে মিটিং মিছিল সমাবেশ করে। নিষ্ঠুর নির্দয় ইয়াহিয়া সরকারের পুলিশ নির্বিচারে মিছিলের উপরে গুলি বর্ষণ করে গণহত্যা শুরু করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে মিটিং মিছিল সংগ্রাম অব্যাহত থাকে।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর রেচকোর্স ময়দানে ৭ মার্চের ঐতিহাসিক কালজয়ী ভাষণ শুধু বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়কেই নাড়া দেননি, ভাষণটি সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। এ ভাষণের মধ্য দিয়েই স্বাধীনতার বীজ রোপিত হয়েছিল। এ ভাষণের মধ্য দিয়েই সমগ্র জাতিকে তিনি মুক্তির মোহনায় দাঁড় করেছিলেন। এটা শুধু ভাষণ ছিল না , ছিল বঙ্গবন্ধুর অমৃত বাণী। আর তাদের প্রাণের মানুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এ অমৃত বাণী শোনার জন্য বাংলার দামাল ছেলেরা, শ্রমিক, কৃষক, তাতি, জেলে, ব্যবসায়ীসহ সকল শ্রেণির নারী পুরুষ ছুটেছিল সেদিন রেসকোর্স ময়দানে। মুহুর্তের মধ্যে রেসকোর্স ময়দান পরিণত হয় এক মহা জনসমুদ্রে। সেখানে তিনি শোনালেন তাঁর অমৃত বাণী, ‘ প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো। তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রæর মোকাবিলা করতে হবে।.. রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরও দেবো। এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, জয়বাংলা।
মুক্তিযুদ্ধের সূচনা লগ্নে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে ঢাকায় অপারেশন সার্চ লাইট নামের এক বর্বর সামরিক অভিযানের মধ্য দিয়ে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনি যে গণহত্যার সূচনা করেছিল তা ইতিহাসের পাতায় এক জঘন্যতম অধ্যায়। ২৫ মার্চ রাতে নির্বিচারে গণহত্যা শুরু করলে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাত ১২ টার পরে অর্থাৎ ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ঐ রাতেই ঢাকায় হত্যা করা হয় হাজার হাজার বাঙালিকে। আর সেই রাতেই গ্রেপ্তার করে পশ্চিম পাকিস্তানিতে নিয়ে যাওয়া হয় বাঙালির প্রাণের নেতা, বাঙালির অভিভাবক, স্বাধীনতার সর্বাধিনায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। কিন্তু গ্রেপ্তার হওয়ার আগে ধানমন্ডি বাসভবন থেকে ওয়্যারলেস বার্তার মাধ্যমে স্বাধীনতার ডাক দেন তিনি। ঘোষণা করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা। শুরু হলো বাঙালির স্বশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে ও নির্দেশিত পথে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চালিয়ে যায় । তাঁর অনুপস্থিতিতে মুক্তিযুদ্ধের অন্যান্য সংগঠকবৃন্দ অস্থায়ী মুজিবনগর সরকার গঠন করে পাক বাহিনির বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলেন। যতই দিন অতিবাহিত হয়, যতই ঝরতে থাকে রক্ত, স্বদেশের মাটি থেকে পাক হানাদার বাহিনী মুক্ত করতে বাঙালি ততই মরিয়া হয়ে ওঠে। মুক্তি বাহিনী ও মিত্র বাহিনীর দ্বিমুখী প্রতিরোধের মুখে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পন করতে বাধ্য হয়। দীর্ঘ নয় মাসের স্বাধীনতা সংগ্রামে ত্রিশ লক্ষ শহিদ ও দুই লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন হয় বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ। প্রতিষ্ঠা হলো পৃথিবীর বুকে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। স্বাধীনতার ৫০ বছর অতিবাহিত হয়েছে। বিজয়ের মাসে আসুন আমরা আমাদের সন্তানকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গড়ে তোলার প্রত্য্যয় করি। আমরা হিন্দু নই, আমরা মুসলিম নই, আমরা বৌদ্ধ নই, আমরা খ্রিষ্টান নই। আমাদের সবচেয়ে বড় পরিচয় হোক আমরা বীর বাঙালি। আমরা মুজিব সেনা।

লেখক : অসীম কুমার সরকার, সহকারী উপজেলা
শিক্ষা অফিসার, মোরেলগঞ্জ, বাগেরহাট।

খুলনা গেজেট/ টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!