শুধু চিৎকার করে, বক্তৃতা দিয়ে অধিকার অর্জন হয় না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অধিকারটা আদায় করে নিতে হবে। আদায় করার মতো যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।
সোমবার (৮ মার্চ) আন্তর্জাতিক নারী দিবসে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। দিবসটি উপলক্ষে রাজধানীর শিশু একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারীরা যোগ্য হবে শিক্ষাদীক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে। জাতির পিতা স্বাধীনতার পর তাই নারী শিক্ষা অবৈতনিক করে দিয়েছিলেন। আমরা এখন উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত বৃত্তি দিচ্ছি। আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর নারীদের যোগ্যতা অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, ৯৬ সালের আগেও কোনো নারী ডিসি, এসপি, ইউএন ছিল না। এখন আছে। সবক্ষেত্রে মেয়েদের অবস্থান নিশ্চিত করা হয়েছে। একটি সমাজের অর্ধেক যদি অকেজো থাকে সে সমাজ খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলবে। আগে যেমন ধর্মের নামে মেয়েদের বন্দি করে রাখার প্রচেষ্টা ছিল, সেই অচলায়তন ভেদ করে মেয়েরা এগিয়ে যাচ্ছে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যে স্বাধীনতা অর্জন করেছি তার পেছনে আমার মা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের অনেক অবদান রয়েছে। পর্দার আড়ালে থেকে তিনি (দেশের জন্য) কাজ করেছেন। কখনও কোনো প্রচার চাননি।
তিনি বলেন, আমার বাবা সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। দিনের পর দিন তিনি কারাগারে ছিলেন। মাকে দেখেছি তার পাশে থেকে কীভাবে সহযোগিতা করেছেন। তার নিজের জীবনের কোনো চাওয়া-পাওয়া ছিল না। সংসারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়ে তিনি বাবাকে দেশের কাজে পূর্ণ মনোযোগের সুযোগ করে দিয়েছেন। ছেলে-মেয়ে মানুষ করা থেকে শুরু করে (বঙ্গবন্ধু যখন জেলে থাকতেন) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগসহ সবার কার্যক্রম দেখা, আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তোলা- সবই তিনি (বেগম মুজিব) করতেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার মা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব অনেক সময় অনেক সিদ্ধান্ত (মুজিবকে) দিয়েছিলেন, যা স্বাধীনতা অর্জনকে ত্বরান্বিত করেছিল। আমার বাবাকে দেখেছি, তিনি যথেষ্ট সম্মান দিতেন এবং গুরুত্ব দিতেন আমার মায়ের মতামতকে। যেকোনো অর্জনের পেছনেই একজন নারীর যে অবদান থাকে সেটাই সব থেকে বড় কথা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নয়া চীন বই থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ইসলাম ধর্ম প্রথম গ্রহণ করেন একজন নারী- বিবি খাদিজা। সমাজকে আমরা যদি এগিয়ে নিতে চাই, তাহলে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে হবে।