খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ডেঙ্গুতে একদিনের ৯ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১ হাজার ২১৪

শীতের দিনে গ্রামের বাড়ি 

আরিফুল ইসলাম 

শীতের কুয়াশাছন্ন কাক ডাকা ভোর,চারদিকে ঘন কুয়াশায় ঢেকে সবকিছু ধোঁয়াটে দেখাচ্ছে। উত্তুরে বাতাস যেন শীতের তীব্রতা আরও বাড়িয়ে তুলছে।
অনিক এবং আনিকা ঘরে কাঁথা আর লেপ মুড়ি দিয়ে নাক ডেকে ঘুমোচ্ছে। কিন্তু তখনই একটি কণ্ঠস্বর ওদের ঘুমের বারোটা বাজিয়ে দিল।
ওদের দাদিমা রান্নাঘর থেকে ওদের ডাকছে
:ও দাদা ভাই! ও দিদি ভাই! তোমরা এখনো ওঠো নাই? তারাতাড়ি ওঠো,দেখো আমি তোমাদের জন্য পিঠে করছি,খেজুর রস দিয়ে পায়েস রান্না করছি,তারাতাড়ি হাত-মুখ ধুয়ে এসো।
ওরা দু’জন ঘুম থেকে উঠে পুকুরে যায় হাত-মুখ ধোয়ার জন্য। দেখতে পায় পুকুরের পানির উপর ধোঁয়া উড়ছে।ওরা হাত-মুখ ধোয়ার পর চলে আসে দাদিমার কাছে রান্নাঘরে। এসে দেখতে পায় থালার উপর রাখা গরম গরম ভাপা পিঠা ও চিতই পিঠা আর হরেক রকমের ভর্তা আর চুলোর উপর হাঁড়িতে কি যেন টগবগ টগবগ করে ফুটছে।
অনিক:আচ্ছা, দাদিমা, ঐ হাঁড়িতে কি রান্না হচ্ছে?
দাদিমা:ঐ হাঁড়িতে খেজুর  রসের পায়েস রান্না হচ্ছে।
আনিকা:দাদিমা,খেজুর রসের পায়েস বানাতে কি কি উপকরণ লাগে?
দাদিমা:খেজুর রসের পায়েস বানাতে চাল,নারিকেল, খেজুরের রস এগুলো লাগে।
অনিক:দাদিমা,ঐ থালায় কি কি ভর্তা করেছো?
দাদিমা:ঐ থালায় সরিষা, চিংড়ি শুঁটকি, লোটা শুঁটকি আর মরিচ ও রসুন বেঁটে ভর্তা বানানো হয়েছে। এগুলো দিয়ে চিতই পিঠা খেতে খুবই সুস্বাদু হয়।
আনিকা:হ্যা,তুমি ঠিক বলেছো দাদিমা।সরিষা ভর্তা আমার খুব প্রিয়। চিতই পিঠা আর সরিষা ভর্তা,আহ!কী স্বাদ!
দাদিমা:হ্যা, দিদি ভাই, তোমার খুব পছন্দ বলেই বেশি করে বানিয়েছি সরিষা ভর্তা।
অনিক:দাদিমা,দাদা ভাই কই,তাকে তো দেখতে পাচ্ছি না?
দাদিমা :তোমার দাদা ভাই ভিটেয় গেছে,সেখানে নতুন শাকসবজির বুনেছেন, তাতে পানি দিতে।
আনিকা:দাদিমা, ভিটেতে এবার কি কি লাগানো হয়েছে?
দাদিমা :এবার বাঁধাকপি,ফুলকপি, শালগম,মূলা,টমেটো, পালংশাক, আলু আর কাঁচামরিচের চারা লাগানো হয়েছে।
অনিক:দাদিমা,আমরাও ভিটেতে যাবো,আমরা শীতের তরতাজা, সতেজ শাকসবজি নিজেদের হাতে তুলতে চাই।
দাদিমা :আচ্ছা, ঠিক আছে, আগামীকাল যাবে।এখন এই গরম গরম পিঠে খাও আর তারপর উঠোনে গিয়ে দেখো,রোদ উঠেছে কি’না!তাহলে শীতের মিষ্টিরোদের তাপ উপভোগ করো গিয়ে।  তোমাদের দুলাল কাকা এলে পরে সবাই ঘেরে যাবো।সেখানে আজ ঘের থেকে মাছ ধরা হবে।
আনিকা:আচ্ছা, দাদিমা।আজ অনেক মজা হবে।সত্যি,শীতের দিনে গ্রামে না এলে হয়তো এসবের কিছুই আমরা উপভোগ করতে পারতাম না।এবার থেকে প্রতি বছর শীতের ছুটিতে গ্রামে আসবো তোমাদের কাছে,তোমার হাতের মজার মজার পিঠেপুলি আর জমির সতেজ শাকসবজি খেতে।
দাদিমা :হ্যা, দিদি ভাই এসো।তোমার বাবা-মাকেও সঙ্গে নিয়ে এসো।তোমরা এলে, এই বুড়ো-বুড়িরও অনেক ভালো লাগে।তোমাদের কথা আমাদের খুব মনে পড়ে।
অনিক আর আনিকা পিঠেপুলি খেতে খেতে দেখতে পায় উঠোনে কুয়াশার আবরণ কেটে গিয়ে, সোনালী রোদ ছড়িয়ে পড়ছে।ওরা দু’জনে চলে যায় উঠোনে মিষ্টি রোদের মিষ্টি ছোঁয়া উপভোগ করার জন্য। আর দাদিমা ব্যস্ত হয়ে পড়ে ঘরের অন্যান্য কাজকর্মে।
খুলনা গেজেট/কেএম




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!