খুলনা, বাংলাদেশ | ২ পৌষ, ১৪৩১ | ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল, ফিরছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা : হাইকোর্ট
  জুলাই-আগস্ট গণহত্যার মামলায় ট্রাইব্যুনালে হাজির সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, ফারুক খান ও দীপু মনিসহ ১২ জন

শিশু রাহি হত্যা : জনির আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার আগরদাড়ি গ্রামের দ্বিতীয় শ্রেণীর স্কুল ছাত্রী শিশু নুসরাত জাহান রাহি হত্যা মামলার প্রধান আসামী রেজাউল কবীর জনি ও প্রধান সাক্ষী অজয় পাইন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকালে তারা সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. মহিদুল হাসানের কাছে এ জবানবন্দি দেয়।

আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদানকারি আসামী রেজাউল কবীর জনি (২২) সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার কুল্যা ইউনিয়নের আগরদাড়ি গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক সরদারের ছেলে। একই ধারায় অপর জবানবন্দি প্রদানকারি সাক্ষী অজয় পাইন একই উপজেলার বুধহাটা গ্রামের সুকুমার পাইনের ছেলে ও বুধহাটা বাজারের পলাশ জুয়েলার্সের সত্ত্বাধিকারী।

নিহত শিশু নুসরাত জাহান রাহি (৯) সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার আগরদাড়ি গ্রামের রবিউল ইসলাম রুবেল এর মেয়ে ও আগরদাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী। সম্পর্কে জনি রাহির প্রতিবেশী চাচা।

মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা আশাশুনি থানার উপপরিদর্শক মোঃ ফয়সাল আহম্মেদ জানান, জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মোঃ মহিদুল হাসানের কাছে নিজেকে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ার কথা স্বীকার করে কানের দুল কেড়ে নেওয়ার ঘটনা বাবা ও মাকে জানিয়ে দেওয়ার কথা বলায় রাহিকে তার সোয়েটার ছিঁড়ে হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে বলে উল্লেখ করেছে। সে ওই দুল বুধহাটার অজয় পাইনের কাছে নয় হাজার টাকায় বিক্রি করেছিল বলে স্বীকার করে। জবানবন্দি শেষে জনিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অজয় বাইনকে নিজ জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

একইভাবে অজয় পাইন তার জবানবন্দিতে জানিয়েছে ৫ মাস আগে জনি তার মায়ের সাড়ে চার ভরি সোনার দুল তার কাছে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছিল। সে কারণে গত শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে দুই আনা ওজনের এক জোড়া ছোট দুল বিক্রি করতে এলে তার কাছে জানতে চাইলে সে বলে যে মায়ের দুল বিক্রি করে পরে সে ছোট আকারে তৈরি করে দিয়েছিল। সেই দুল সে বিক্রি করতে এসেছে। একপর্যায়ে ওই দুলজোড়া বাবদ জনি নয় হাজার টাকা নিয়ে যায়।

সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম জানান, জনি ঢাকায় একটি কোম্পানীতে চাকরি করতো। নয় মাস আগে সে বিয়ে করে। বিয়ের পরে মাস চারেক আগে সে চাকরি হারায়। এতে ব্যাপক অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে জনি। পরে গ্রামের বাড়িতে এসে সে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। মাদকের টাকা জোগাড় করতে সে রাহির কানে থাকা সোনার দুল ছিনিয়ে নেওয়ার চিন্তা করে। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে রাহি তার বান্ধবী মিতা বসুর সাথে খেলা করছিল। জনি শিশু রাহিকে খাবার কিনে দেওয়ার কথা বলে বান্ধবীর বাড়ি থেকে পার্শ্ববর্তী হলুদ খেতে নিয়ে যায়। সেখানে জোরপূর্বক তার কানের সোনার দুল খুলে নেয়। এসময় রাহি বিষয়টি তার বাবা ও মাকে জানিয়ে দেওয়ার কথা বললে জনি তার গায়ের সোয়েটার ছিঁড়ে হাত ও পা বেঁধে শ্বাসরোধ করে রাহিকে হত্যা করে। পরে তার লাশ পুকুরে ফেলে দেয়।

তিনি আরো বলেন, শিশু রাহি হত্যার ঘটনায় রেজাউল কবীর জনিকে রোববার (১৫ ডিসেম্বর) বিকালে তার গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।সোমবার বিকালে জনি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারের প্রেরণ করা হয়েছে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!