খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৮৮৬

শিক্ষার্থীদের নির্যাতন : ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের ১৮ জনকে শাস্তি

গেজেট ডেস্ক

ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে একাডেমিক কাউন্সিল। সাধারণ শিক্ষার্থীদের শারীরিক, মানসিক নির্যাতন ও যৌন হয়রানির অভিযোগে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে কলেজের সম্মেলনকক্ষে সভা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাশতুরা মোশাররফ ঐষিকা (২৬তম ব্যাচ) ও সাধারণ সম্পাদক ইমরুল হাসান জীমকে (২৬তম ব্যাচ) ক্যাম্পাসে আজীবন অবাঞ্ছিত ঘোষণা, বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) সনদ স্থগিতসহ মামলা করার সুপারিশ করা হয়। এ ছাড়া অন্য ১৬ জনের বিরুদ্ধে ইন্টার্নশিপ সনদ স্থগিত, ক্যাম্পাস ও ছাত্রাবাস থেকে বহিষ্কারসহ বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ২৬তম ব্যাচের নুজহাত তাবাসসুমকে আজীবন ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। ২৭তম ব্যাচের নাইম আল ফুয়াদ খানকে পাঁচ বছরের জন্য ইন্টার্নশিপ স্থগিত, আজীবনের জন্য ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা, ছাত্রাবাস থেকে আজীবন বহিষ্কার ও মামলা করার সুপারিশ করা হয়েছে। একই ব্যাচের সৌরভ পাল ও ইমরান হোসেনকে পাঁচ বছরে জন্য ইন্টার্নশিপ স্থগিত ও আজীবন ছাত্রাবাস থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া ২৭তম ব্যাচের আশরাফুল কবিরকে চার বছরের জন্য ইন্টার্নশিপ স্থগিত ও আজীবন ছাত্রাবাস থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

২৭তম ব্যাচের আল নাহিয়ান খানকে তিন বছরের জন্য ইন্টার্নশিপ স্থগিত ও ছাত্রাবাস থেকে আজীবন বহিষ্কার, ২৮তম ব্যাচের আজিজুল হক (প্রান্ত) এবং ২৯তম ব্যাচের সাদমান ও ইফতেখার আহমেদকে দুই বছর একাডেমিক কার্যক্রম থেকে ও আজীবন ছাত্রাবাস থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ২৭তম ব্যাচের অনুজ বিশ্বাসকে এক বছর একাডেমিক কার্যক্রম থেকে ও আজীবন ছাত্রাবাস থেকে বহিষ্কার, ২৯তম ব্যাচের মুসুক উল্লাহ এবং ৩০তম ব্যাচের আকিফুর ফারহান, প্রান্তিক চন্দ্র মোহন্ত, তাজবিন আহমেদ, মাহমুদুল হাসান, শামীম রেজাকে ছয় মাস একাডেমিক কার্যক্রম থেকে ও ছাত্রাবাস থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে।

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে অধ্যক্ষের কাছে শারীরিক, মানসিক নির্যাতন, যৌন হয়রানিসহ নানা অভিযোগ দিয়েছিলেন কলেজের শিক্ষার্থীরা। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ফারুক আহমেদকে আহ্বায়ক করে ছয় সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে কথা বলতে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাশতুরা মোশাররফ ও সাধারণ সম্পাদক ইমরুল হাসানের মুঠোফোন নম্বর বন্ধ থাকায় তাঁদের বক্তব্য জানা যায়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের দুই শিক্ষার্থী বলেন, যাঁদের বিরুদ্ধে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তাঁরা সবাই ছাত্রলীগের কলেজ শাখার নেতা ও কর্মী। তাঁদের আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো সুযোগও দেওয়া হয়নি। পরিকল্পিতভাবে চক্রান্ত করে এ সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছে একাডেমিক কাউন্সিল।

ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক দিলরুবা জেবা প্রথম আলোকে বলেন, আজকের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ও সুপারিশ নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। পর্যালোচনা শেষে একাডেমিক কাউন্সিল সর্বসম্মতভাবে এ সিদ্ধান্ত নেয়। তিনি বলেন, গত ২৪ আগস্ট কলেজের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় কলেজে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়।

 

খুলনা গেজেট/এইচ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!