খুলনা, বাংলাদেশ | ২২ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৭ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  সাবেক পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব আমিনুল ইসলাম খান গ্রেপ্তার
  দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১২২৫
  পোল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত হিসেবে খোরশেদ আলমের নিয়োগ বা‌তিল : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
  সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রহমানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

অনিয়ম ও হয়রানী : কয়রা ও শিবসা সেতুর টোল আদায় বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক

খুলনা-কয়রা সড়কের শিবসা ও কয়রা সেতুর টোল আদায় বন্ধের দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। এবার ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর সেই দুই সেতুর টোল আদায় সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছেন স্থানীয় শিক্ষার্থীরা।

কয়রা উপজেলার বাসিন্দা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোশাররফ হোসেন বলেন, খুলনা-কয়রা সড়কের দুই সেতু দিয়ে যাঁরা চলাচল করেন, তাঁদের বেশির ভাগই নিম্ন আয়ের মানুষ। তাদের কাছ থেকে এত দিন ইচ্ছামতো টোল আদায় করছেন ইজারাদারের লোকজন। কোনো তালিকা না টাঙিয়ে দুই থেকে পাঁচ গুণ পর্যন্ত বেশি টোল নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ চালকদের। দেওয়া হয়নি অতিরিক্ত টোল আদায়ের কোনো রশিদও। অতিরিক্ত টোল আদায়ের প্রতিবাদ করতে গেলে ইজারাদারের নিজস্ব বাহিনীর হাতে মারধর ও শারীরিকভাবে হেনস্তার শিকার হয়েছে মানুষ। এ কারণে শিক্ষার্থীরা সাময়িকভাবে টোল আদায় বন্ধ করেছেন এবং স্থায়ীভাবে টোল মওকুফের জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালে সেতু দুটি দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। এর পর থেকে নিয়মিত সেতু দুটি ইজারা দেওয়া হচ্ছে। ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ৯৪৩ দিনের জন্য সেতুর টোল আদায়ের ইজারা পেয়েছে মেসার্স আলী আকবর এন্টারপ্রাইজ। ভ্যাট, আয়করসহ ইজারা মূল্য প্রায় দুই কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠানটির মালিক মো. আলী আকবর টিপু খুলনা সিটি করপোরেশনের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও দুর্যোগ সম্পাদক।

সেতুতে চলাচলকারী ব্যক্তিরা বলছেন, এত দিন টোল আদায়কারী লোকজন মুখ দিয়ে যে টাকার কথা বলেছেন, তা দিতে বাধ্য করা হয়েছে। দুই সেতুতে টোল আদায়ের কাজে সার্বক্ষণিক ২০ থেকে ২৫ জন লোক থাকতেন। কেউ কিছু বলতে গেলেই তেড়ে আসতেন। প্রায়ই তাঁদের হামলার শিকার হয়েছেন চলাচলকারীরা। গত বৃহস্পতিবার থেকে ইজারা আদায় বন্ধ আছে।

কয়রা কপোতাক্ষ মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাইমুল ইসলাম বলেন, ‘গত রোজার ঈদের সময় অতিরিক্ত টোল আদায়ের প্রতিবাদ করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীকে সেতুর ওপর মারধর করেছিলেন ইজাদারের লোকজন। দুই সেতু দিয়ে একবার পার হলেও দুবারের টাকা পরিশোধ করতে হতো। এখন আমরা নতুনভাবে বাংলাদেশটা গড়তে চাই।’

প্রশান্ত কুমার নামে এক ট্রাকচালক বলেন, ‘টোল আদায়কারী লোকজন অতিরিক্ত টাকা নিলেও কোনো রশিদ দিতেন না। চালকদের সঙ্গে প্রায়ই তাঁদের ঝগড়া হতো। তাঁদের বেপরোয়া আচরণে সবাই অতিষ্ঠ ছিল। এখন শিক্ষার্থীরা টোল আদায় বন্ধ করে দেওয়ায় সবাই স্বস্তি পেয়েছি।’

কয়রা উন্নয়ন সংগ্রাম ও সমন্বয় কমিটির সভাপতি বিদেশ রঞ্জন মৃধা বলেন, খুলনা-কয়রা সড়কের দুই সেতুতে টোল আদায়ের নামে রীতিমতো চাঁদাবাজি হতো।

সওজ খুলনা অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আনিসুজ্জামান বলেন, খুলনা-কয়রা সড়কে অবস্থিত শিবসা ও কয়রা সেতুর টোল আদায় শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি অধিদপ্তরে জানানো হয়েছে। এখন সরকার সিদ্ধান্ত নেবে পরবর্তী সময়ে কী করা হবে।

 

খুলনা গেজেট/এইচ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!