ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে পূর্ব নির্ধারিত চলমান পরীক্ষা স্থগিত করেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) প্রশাসন।
শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সত্যপ্রসাদ মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জরুরি একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। একাধিক সদস্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে কবে এসব পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আল আমিন সিদ্দিক দেশ রূপান্তরকে বলেন, শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করায় আজ একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এসব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। তবে কবে সেই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে—সে জন্য আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসব, আলোচনা করব, এরপর নতুন তারিখ ঘোষণা করা হবে।
শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরানো এবং হাইকোর্টের রায়ের বিষয়ে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে আমরা একটা সমাধান করব। আর হাইকোর্ট এর লিখিত আদেশ না পাওয়ায় আমরা এখনো সেদিকে চিন্তাভাবনা করিনি। লিখিত আদেশ পেলে সে অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নেব।
বুয়েট সূত্রে জানা যায়, ঈদ ও নববর্ষের ছুটির পর গত বুধবারের পরীক্ষায় ব্যাচের ১ হাজার ২৭৯ জনের মধ্যে মাত্র ৮ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। তাদের ৫ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া বৃহস্পতিবার ২২তম ব্যাচের টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ১৩০৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে কোনো শিক্ষার্থীই পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। আজও ২০ ব্যাচের কেউ টার্ম ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। ঈদের আগেও কয়েকটি পরীক্ষায় কোনো শিক্ষার্থী অংশ নেয়নি।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের নিশ্চয়তা না পেলে পরীক্ষা কিংবা ক্লাসে ফিরবেন না তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বুয়েটের এক শিক্ষার্থী দেশ রূপান্তরকে বলেন, আমাদের যে দাবি ছাত্ররাজনীতি বিরুদ্ধে সেটিতে আমরা অনড় রয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এর বিরুদ্ধে অফিসিয়াল ঘোষণা না আসা পর্যন্ত আমরা ক্লাস পরীক্ষায় ফিরব না। আমরা পূর্বনির্ধারিত পরীক্ষাগুলো বর্জন করেছি। সকল শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে ফিরলে আমরা আবারো আন্দোলনে নামব।
গত ২৮ মার্চ মধ্যরাতে বুয়েটে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের প্রবেশকে কেন্দ্র করে ছাত্ররাজনীতি প্রতিরোধের আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে সাদ্দাম হোসেনকে প্রবেশে সহযোগিতা করা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য ও বুয়েট শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রাব্বি হলের সিট বাতিল ও ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা প্রশাসন। পরে বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে গেলে সিট ফেরত দিতে ও ছাত্ররাজনীতিতে নিষেধাজ্ঞা স্থগিতের আদেশ দেন হাইকোর্ট। কিন্তু শিক্ষার্থীরা দাবি আদায়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
খুলনা গেজেট/কেডি