খুলনা মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ওষুধ ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের পর ইন্টার্ণী চিকিৎসক ও ব্যবসায়ীদের কর্মবিরতিতে বিপাকে পড়েছেন চিকিৎসাসেবা প্রার্থীরা। মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) সকাল থেকেই বিড়ম্বনায় পড়ছেন রোগীর স্বজনরা।
সোমবার (১৪ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনের মার্কেটে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। মার্কেটের মেসার্স বিপ্লব মেডিসিন কর্ণার নামের একটি ওষুধের দোকানে এক শিক্ষার্থী ওষুধ কিনতে গিয়েছিলেন। তবে দোকানদার অতিরিক্ত মূল্য চাওয়ায় তিনি প্রতিবাদ করেন। তখন তাকে লাঞ্ছিত করা হয়। পরবর্তীতে অন্য শিক্ষার্থীরা গিয়ে এ বিষয়ে জানতে চাইলে দোকানদাররা জড়ো হয়ে তাদের ওপর হামলা করেন।
অন্যদিকে ওষুধের দোকানদাররা দাবি করেন, ওই শিক্ষার্থী ৭০ টাকার ওষুধ কেনার পর তিনি মোট দামের ওপর ১০ শতাংশ কমিশন চেয়েছিলেন। তবে দোকানদার ওই কমিশন দিতে রাজি না হওয়ায় দুজন বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পরে মেডিক্যাল কলেজের হল থেকে শিক্ষার্থীরা গিয়ে ওই দোকানে ভাঙচুর চালান। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হন। এদের মধ্যে শিক্ষার্থী সবুজ সরকার, আনান, নাফিজ ফুয়াদ, হাফিজ, তাহসিম, মাহাদী ও দেব চৌধুরীর অবস্থা গুরুতর। এ ঘটনার পর খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্ণ চিকিৎসকরা কর্মবিরতি শুরু করেছেন।
ইন্টার্ণী চিকিৎসক ও ওষুধের দোকান বন্ধ থাকায় বিড়ম্বনায় পড়েছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। একাধিক সেবা প্রত্যাশীরা জানান, ইন্টার্ণী চিকিৎসকরা হাসপাতালে সব সময় দায়িত্ব পালন করেন। তারা রোগীদের মূল সেবা প্রদান করেন। কিন্তু তাদের অনুপস্থিতিতে স্বাভাবিক সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন। আবার ওষুধের দোকান বন্ধ থাকায় তাদের ২/৩ কিলোমিটার দূরে গিয়ে ওষুধ আনতে হচ্ছে। ফলে সময় ও অর্থ নষ্ট হচ্ছে।
খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে উপরিচালক ডা. নিয়াজ মুস্তাফিজ চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনা দু:খজনক। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। রোগীদের ভোগান্তির বিষয় মাথায় রেখে পর্যাপ্ত ওষুধ মজুদ রাখা হয়েছে। জরুরী সকল হাসপাতালে রয়েছে। এছাড়া ইন্টার্ণী চিকিৎসকদের অনুপস্থিতিতে চিকিৎসক সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, হামলার ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষ আইনগতসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্যদিকে হামলার পর আপাতত দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হাসপাতালে সামনের ওষুধ ব্যবসায়ীরা। ওষুধ ব্যবসায় সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির পরিচালক জিল্লুর রহমান জুয়েল জানান, হামলার ঘটনায় তাদের ৯ জন ব্যবসায়ী আহত হয়েছেন। শিক্ষর্থীরা একটি দোকানের ভেতরে ব্যাপক ভাংচুর চালিয়েছে। সংঘাত এড়ানোর জন্য আমাদের দোকানগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে।
সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ওসি মোমজাজুল হক জানান, খুমেক হাসপাতালে সংঘাতের ঘটনায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। তবে কেউ ওই ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ দেননি। তবে পুলিশ বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখছে।
খুলনা গেজেট/কেডি