প্রায় ১৭ মাস বন্ধ থাকার পর বাংলাদেশে ১২ সেপ্টেম্বর হতে কীভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা হবে তার বিস্তারিত ঘোষণা করেছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। করোনাভাইরাস মহামারীর পর গত বছরের মার্চের দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।
রবিবার ঢাকার সচিবালয়ে এক আন্ত:মন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি সাংবাদিকদের কাছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সরকারি প্রস্তুতি এবং পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, আগস্টের শেষ দিকে সংক্রমণের হার কমে যাওয়াতে তারা ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছেন। সেদিন থেকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকসহ সকল ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শ্রেণীকক্ষে পাঠদান শুরু করবে। তবে এক্ষেত্রে কিছু সরকারি নির্দেশনা মেনে চলতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, যেহেতু প্রায় ১৭ মাস পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলছে, তাই খোলার জন্য সার্বিক প্রস্তুতির দরকার রয়েছে। একই সঙ্গে নতুন পরিস্থিতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখতে সচেতনতা সৃষ্টির বিষয়েও গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি।
যেসব নির্দেশনা মেনে চলতে হবে :
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি জানিয়েছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো শ্রেণীকক্ষে পাঠদান শুরু করলেও সেখানে বেশ কিছু নিয়ম-কানুন এবং নির্দেশনা মেনে চলতে হবে :
• শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে হবে।
• স্কুলে স্যানিটাইজ করার ব্যবস্থা রাখতে হবে। স্কুলে যেতে হলে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক
• চলতি বছর এবং সামনের বছর যারা এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা দেবে, তাদের প্রতিদিনই ক্লাস নেয়া হবে।
• প্রাথমিক স্কুলে পঞ্চম শ্রেণীর ক্লাসও চলবে প্রতিদিন।
• প্রাথমিক স্কুলে প্রথম হতে চতুর্থ শ্রেণী এবং হাইস্কুলে ষষ্ঠ হতে অষ্টম শ্রেণীর ক্লাস চলবে সপ্তাহে একদিন করে।
• স্কুলে কোন অ্যাসেম্বলি হবে না। খেলাধূলা হবে স্বল্প পরিসরে। লাইন বেঁধে ক্লাসে ঢুকতে হবে এবং বেরুতে হবে।
• শুরুতে দিনে ৪ হতে ৫ ঘণ্টা করে ক্লাস নেয়া হবে। পরে সময় আরও বাড়ানো হবে।
• বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের সিন্ডিকেটের সভা করে খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি জানান, সরকার প্রতিদিনের সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিভিন্ন শ্রেণীর জন্য স্কুলের সময় এবং দিনের সংখ্যা পর্যায়ক্রমে বাড়ানো হবে। যদি সংক্রমণ বেড়ে যায়, প্রয়োজন হলে আবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হবে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখা যায় সেজন্য শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারী, কর্মকর্তাদের পাশাপাশি অভিভাবকদের সম্পৃক্ততার ওপরও গুরুত্ব দেন শিক্ষামন্ত্রী।
তিনি বলেন, গণমাধ্যম সহ সামাজিক মাধ্যমে স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য আরো সচেতনতা তৈরি করতে হবে।
তিনি বলেন, যখন সন্তানদের স্কুলে পাঠানোর আগে অভিভাবকরা যেন সন্তানের রোগের কোন উপসর্গ আছে কীনা বা বাড়িতে কেউ অসুস্থ আছেন কীনা, তার দিকে নজর রাখেন।
করোনাভাইরাসের কারণে দেড় বছরের বেশি সময় শ্রেণীকক্ষে পাঠদান বন্ধ থাকলেও এসময় অনলাইনে ক্লাস চালু করা হয়েছিল। তবে সমালোচকরা বলছেন, সরকারের সেই উদ্যোগ খুব একটা সফলতা পায়নি।
খুলনা গেজেট/এনএম