খুলনা, বাংলাদেশ | ২৪ কার্তিক, ১৪৩১ | ৯ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৮ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১১৩৪
  আগামী ৩ মাস দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে কৃষক দলের নেতৃত্বে কৃষক সমাবেশ, তারেক রহমানের নতুন কর্মসূচি
  অনিয়মের দায়ে টিসিবি’র ৪৩ লাখ ফ্যামিলি কার্ড বাতিল

শিং মাছ কি আসলেই শরীরে রক্ত বাড়ায়, কী বলছেন চিকিৎসক ?

লাইফ স্টাইল ডেস্ক

শিং মাছ প্রায় সবারই পছন্দের। তবে পছন্দের না হলেও ছোট থেকে বড় সবাই হয়তো কম-বেশি খেয়েছেন। কেননা প্রচলিত রয়েছে যে, শিং মাছ খেলে শরীরে রক্ত (লোহিত কণিকা) বাড়ে। এ কথার ওপর বিশ্বাস করেই অধিকাংশ মানুষ শিং মাছ খান। একসময় শুধু নদী-নালা, খাল-বিল ও পুকুরে পাওয়া যেত এ মাছ। তবে বর্তমানে চাষের মাধ্যমে উৎপাদন করতে পারায় বাজারে প্রায় বছরজুড়েই পাওয়া যায় এই মাছ।

বাজারে শিং মাছের অবশ্য চাহিদাও রয়েছে। কারণ একটাই, প্রচলিত রয়েছে শিং মাছ খেলে শরীরে রক্ত বাড়ে। এ ছাড়াও রয়েছে নানা উপকারিতা। কিন্তু শিং মাছ খেলে আসলেই শরীরে রক্ত বৃদ্ধি পায় কিনা―এ নিয়ে নানা তর্ক-বিতর্ক রয়েছে। এ বিষয়ে দেশের একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন এএমজেড হাসপাতাল প্রাইভেট লিমিটেডের পুষ্টি, ওবেসিটি, ডায়াবেটিস ও মেটাবলিক ডিজিজ কনসালটেন্ট ডা. মো. জয়নুল আবেদীন দীপু।

শিং মাছ কি আসলেই রক্ত বৃদ্ধি করে 
এ চিকিৎসক বলেন, জ্বরের সময় বা অন্যান্য অসুস্থতার সময় অন্য যেকোনো মাছের মতো শিং মাছ খেলেও শরীরে শক্তি বাড়ে। অন্যসব মাছের মতো শিং মাছেও প্রোটিন ও মিনারেল রয়েছে। তবে অন্যসব মাছের তুলনায় শিং মাছে বেশি কিছু বা বিশেষ কোনো উপাদান রয়েছে, এমনটা নয়।

এ ছাড়া প্রচলিত রয়েছে যে, শিং মাছ খেলে রক্ত উৎপন্ন হয়। এ মাছে রক্তের লোহিত কণিকা উৎপাদনের আয়রন, ফলিক অ্যাসিডের মতো উপাদান যে বেশি থাকে, বিষয়টি এমনটাও নয়। আর রক্তের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য লাল শাক, কচু শাক, কচুর লতি ও প্রাণীর কলিজা খাওয়া যেতে পারে। এতে আয়রনের পরিমাণ বেশি থাকে।

শিং মাছের পুষ্টি উপাদান
প্রতি ১০০ গ্রাম শিং মাছে ১২০ কিলোক্যালোরি পরিমাণ ক্যালোরি থাকে। ২৮ কিলোক্যালোরি ফ্যাট, ৯১ দশমিক ৫০ কিলোক্যালোরি প্রোটিন, ৪৯ দশমিক ৬০ আইইউ ভিটামিন এ এবং ১৯৭ আইইউ পরিমাণ ভিটামিন ডি থাকে। এছাড়া ক্যালশিয়াম রয়েছে ২২১ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ১৮৬ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ২০০ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ১১৪ মিলিগ্রাম, আয়রন রয়েছে ২ দশমিক ৩ মিলিগ্রাম ও ম্যাঙ্গানিজ রয়েছে ০ দশমিক ৩০ মিলিগ্রাম। আর শিং মাছে কার্বোহাইড্রেট নেই বললেই চলে।

উপকারিতা 
প্রোটিন, ভালো ফ্যাট, ভিটামিন ও মিনারেলস সমৃদ্ধ হওয়ায় শিং মাছ খেতে স্বাদে অনন্য ও সুস্বাদু হয়ে থাকে। একজন মানুষের দৈনিক প্রোটিনের চাহিদা পূরণে খাদ্যতালিকায় রাখা যেতে পারে এই মাছ। এছাড়া শিং মাছ ভিটামিন এ এবং ডি সমৃদ্ধ হওয়ায় নিয়মিত খাওয়ার ফলে শারীরিক গঠন, দৃষ্টি ও ত্বকে ভালো প্রভাব রাখে। ক্যালশিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম ও পটাশিয়াম সমৃদ্ধ হওয়ায় মিনারেলেরও চাহিদাও পূরণ করে থাকে শিং মাছ।

যারা খাবেন না 
শিং মাছে যদিও ক্ষতিকর কোনো উপাদান নেই। তবে ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ ও পটাশিয়ামে ভরপুর হওয়ায় শিং মাছ কিডনি রোগীদের না খাওয়াই ভালো বলে জানিয়েছেন ড. জয়নুল আবেদীন।

চাষ করা শিং মাছে পুষ্টির ক্ষেত্রে খুব একটা পার্থক্য নেই। তবে চাষকৃত মাছে প্রোটিন ও ফ্যাটের পরিমাণ বেশি থাকে। চাষ করা শিং মাছে ম্যাঙ্গানিজ ব্যবহার করা হয়। মূলত দ্রুত মাছের বৃদ্ধির জন্য এই উপাদান ব্যবহার করা হয়। যা মানবদেহের কিডনির জন্য ক্ষতিকর। এ জন্য কিডনিজনিত যাদের সমস্যা রয়েছে তাদের এ মাছ না খাওয়াই ভালো।

খুলনা গেজেট/এএজে




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!