বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে আমরণ অনশনে বসা খুবি’র (খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়) দুই শিক্ষার্থী এখন আছে হাসপাতালে। রোববার (২৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে মোহাম্মদ মোবারক হোসেন নোমান। টানা ছয় দিনের অনশনে অসুস্থ হয়ে পড়লে সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যাম্বুলেন্সে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে গতকাল শনিবার দুপুরের পর থেকে ইমামুল ইসলাম অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়। তবে সন্ধ্যার পর আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছিল।
এদিকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি) ও কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
অন্যদিকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত কয়েকদিন ধরে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’জন শিক্ষার্থী তাদের শাস্তি প্রত্যাহারের দাবিতে অবস্থান ও অনশন কর্মসূচি পালন করছে। দাবির বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম-কানুন প্রতিপালন করে নিরসনের জন্য তাদেরকে নমনীয় হয়ে দুঃখ বা ক্ষমা চেয়ে শৃঙ্খলা বোর্ডের পত্রের জবাব প্রদানের জন্য কেসিসির মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ প্রশাসনের পক্ষে উপাচার্য একাধিকবার, উপ-উপাচার্য, ডিসিপ্লিন প্রধান, ছাত্রবিষয়ক পরিচালকসহ শিক্ষক এবং এলামনাইবৃন্দ তাদের কাছে যান, বক্তব্য শোনেন, বোঝান এবং পরামর্শ দেন। সর্বশেষ মেয়র তাদেরকে এ আশ্বাস দেন যে, সেভাবে পত্র দিলে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অনুরোধ করবেন দু ’জন শিক্ষার্থীর শাস্তি প্রত্যাহারে সর্বোচ্চ সহানুভূতির সাথে বিবেচনা করতে। কিন্তু ঐ দুই শিক্ষার্থী একটি পত্র দিলেও তারা সেখানে কোনোরকম দুঃখ প্রকাশ বা ক্ষমা চেয়েছেন বলে কর্তৃপক্ষের জানা নেই। শিক্ষকের কাছে এরূপ কোনো ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করা বা ক্ষমা চাওয়া একজন শিক্ষার্থীর জন্য শ্রদ্ধাবোধ, সৌজন্যতা ও মূল্যবোধের পরিচায়ক হলেও তা তারা করেনি।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছে অনশনরত দু’জন শিক্ষার্থীর এহেন আচরণ সত্ত্বেও বাইরের কয়েকটি রাজনৈতিক দল বা বিভিন্ন মতাদর্শের সংগঠন নিয়মবহির্ভুতভাবে রাজনীতি মুক্ত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে অনশনরত শিক্ষার্থীদের নানাভাবে সমর্থন দিচ্ছে। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে প্রকৃত ঘটনা অবহিত না হয়েই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বা কর্তৃপক্ষ নিয়ে নানা বিরূপ মন্তব্য করছেন যা বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত হচ্ছে। এটা খুবই দুঃখজনক, হতাশা ও উদ্বেগের। এতে পরিস্থিতি আরও জটিল হওয়ার আশংকা রয়েছে কারণ, আপামর খুলনাবাসী, রাজনৈতিক দলসহ সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী ও সামাজিক সংগঠন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে রাজনীতি মুক্ত রাখতে বদ্ধপরিকর এবং তারা কখনও কোনো ঘটনায় হস্তক্ষেপ করেননি। এমতাবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সকল মহলের প্রতি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভুত পরিস্থিতি নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিবিধান সমুন্নত রেখে সমাধানে ভূমিকা রাখার জন্য আহবান জানাচ্ছে।
খুলনা গেজেট / এআর