শার্শা উপজেলার সদর ইউনিয়নের সাধারণ জনগণ সাপ্লায়ের বিশুদ্ধ পানির সুফল ভোগ করতে শুরু করেছে। প্রাথমিক অবস্থায় নাভারন বাজারের দুই হাজার পরিবারের বাড়িতে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে এ পানি।
শার্শা উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল হক মঞ্জু বলেন, ‘পানি নিরাপদ না হলে স্বাস্থ্য ভালো থাকে না। স্বাস্থ্য ভালো না থাকলে উন্নয়ন টেকসই হয় না। তাই নিরাপদ পানি পানের সুযোগ তৈরি করা, গুণগতমান, সবার জন্য সহজলভ্য ও টেকসই ব্যবস্থা হিসেবে এই প্রকল্প চালু করা হয়েছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য বিধান করে বহুমুখী পদক্ষেপ হিসেবে গ্রামাঞ্চলের পাড়া-মহল্লার পাশাপাশি স্বাস্থ্য ও শিক্ষাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিরাপদ পানি সরবরাহ কার্যক্রম জোরদারে ইউনিসেফ সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘শার্শা উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ব্যবস্থাপনায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি তৈরি করা হয়। এক লাখ লিটার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ট্রাংকটিতে গভীর নলকূপের মাধ্যমে পানি তোলা হয়। এই পানি আর্সেনিক ও আয়রনমুক্ত।’
শার্শা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বলেন, ‘আমার এলাকায় আর্সেনিক দূষিত এলাকা হওয়ায়, সাধারণ মানুষ যাতে বিশুদ্ধ পানি পেতে পারে সেজন্যই সরকারিভাবে এই প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। বিভাগীয় শহর বা মহানগরীর মানুষের কাছে সাপ্লাই পানি সম্পর্কে একটা ধারণা থাকলেও মফস্বল এলাকায় এই ধারণা একবাইরেই ছিল না। ফলে প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে কিছুটা অসুবিধা হলেও এখন মানুষ সচেতন হয়েছে; সুফল পেতে শুরু করেছে। চাহিদাও বেড়েছে।’
নাভারণ কাজীর বেড় এলাকার সেলিম রেজা বলেন, ‘দিন দুইবার লাইনে পানি আসে। সকাল ৭টায় এবং দুপুর ২টায় । এতেই আমাদের চাহিদা মিটে যায়। অধিকাংশ গ্রাহক চাহিদা মোতাবেক পানি সংরক্ষণ করে রাখে ।’
নাভারন বাজারের রুস্তম আলী বলেন, ‘এই এলাকার মানুষের সুপেয় নিরাপদ পানির খুব অভাব ছিল। এখন আমরা খুব ভাল আছি। আর্সেনিক ও আয়রণমুক্ত পানি পাচ্ছি। মফস্বলে থেকেও শহরের স্বাদ পাচ্ছি।’
গৃহবধু মমতাজ বেগম বলেন, ‘আগে আমরা সাধারণ টিউবওয়েলের পানি ব্যবহার করতাম। ঘরের মেঝের টাইলস, বেসিন, বাথরুম, হাড়িপাতিল সব আয়রনে লাল হয়ে যেতো। সাপ্লাই পানি ব্যবহারের পর থেকে আর লাল হয় না। রান্নাবান্নার কাজেও এই পানি ব্যবহার করছি।এখন আমরা খুব ভাল আছি ।’
শার্শা ইউনিয়ন পরিষদের ব্যবস্থাপনায় দুটি ধাপে মাসিক ১৫০ এবং ১৯০ টাকার বিনিময়ে প্রতিটি পরিবারকে এই পানি সরবরাহ করা হয়ে থাকে। এ টাকা দিয়েই প্রকল্পের সকল ব্যয় মেটানো ও দেখভালকারীদের বেতন ভাতা দেওয়া হয় বলে জানান চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন।
খুলনা গেজেট/এমআর/এনএম