নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে বিবস্ত্র করে বর্বর নির্যাতনের ঘটনাসহ সারাদেশে ঘটে যাওয়া একের পর এক ধর্ষণ, নারী নিপীড়নের ঘটনায় সম্প্রিক্ত ও পৃষ্ঠপোষকদের গ্রেপ্তার করে বিচারের এবং নারীর প্রতি সহিংসতার স্থায়ী অবসানের দাবিতে মৌন পদযাত্রা ও আলোক প্রজ্জলন করেছে বেনাপোলসহ শার্শা উপজেলাবাসি।
বুধবার সন্ধ্যা ৭ টার সময় বেনাপোল পৌর আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ের সামনে শার্শা উপজেলা ও বেনাপোল পৌর ছাত্রলীগের আয়োজনে এ প্রতিবাদে আলোক প্রজ্জলন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ছাত্রলীগ নেতা কর্মীরা বেনাপোল বাজারে মৌন পদযাত্রা করেন মোমবাতি জ্বালিয়ে।
ছাত্রলীগ নেতারা বলেন, ‘ধর্ষকের কোন দল নেই। সে যেই হোক না কেন আমরা তার কঠোর শাস্তি চাই। আজকে আমরা আঁধারের বিরুদ্ধে আলোক মিছিল করে সেই বার্তাটি দিতে চাই।’
শার্শা উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আজিবর রহমান বলেন, ‘ধর্ষক এর কোন দল নেই। সে যেই হোক তাকে আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে।’
বেনাপোল পৌর যুবলীগের আহবায়ক সুকুমার দেবনাথ বলেন, ‘কিছু ফ্যাসিবাদি চক্র শেখ হাসিনাকে নানান প্রশ্নের সম্মুখীন করে তোলা তার রাজনীতির জনপ্রিয়তা হ্রাসের জন্য আজ ধর্ষণের মত ন্যাক্কারজনক কাজে লিপ্ত হয়েছে। আমরা এই বেনাপোল সীমান্ত থেকে ধর্ষকদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলে তাদের আইনের সোপর্দের জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি। আজ দেশের উন্নয়ন দেখে একটি চক্র ধর্ষণের মত অপকর্মে লিপ্ত হয়ে আ’লীগের সুনাম ক্ষুন্ন করতে উঠে পড়ে লেগেছে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন শার্শা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক আকুল হোসাইন, সহ সভাপতি আমিনুর রহমান, নাছির উদ্দিন প্রমুখ।
অপরদিকে ’হারবে ধর্ষক, জিতবে দেশ, ধর্ষণ মুক্ত বাংলাদেশ’ এই স্লোগানে শার্শা সহ দেশব্যাপী ধর্ষণ ও নারী সহিংসতা এবং ধর্ষকদের ‘দ্রুত বিচার আইনে’ সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে সকাল ১০ টার সময় শার্শায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। উপজেলার নাভারণ সাতক্ষীরা মোড়ে উদ্ভাবক মিজানুর রহমান মিজানের উদ্যোগে ৭ দফা দাবিতে এ মানববন্ধন পালিত হয়েছে।
এ সময় মানববন্ধন কর্মসূচিতে যোগ দেন ঝিকরগাছা সেবা সংগঠন, ঝিকরগাছা সেবক সংগঠন, সার্চ মানবাধিকার কল্যান ট্রাস্ট শার্শা, নবীবনগর মিতালী যুব সংঘ ও বাঁকড়া স্বপ্নচূড়া সংগঠন সহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের কর্মীরা।
মানববন্ধনে ৭ দফা দাবির মধ্যে ধর্ষণ আইন সংশোধনের মাধ্যমে সর্ব্বোচ শাস্তি মৃত্যুদন্ড নিশ্চিত করা, ধর্ষণ প্রতিরোধে প্রতিটি জেলায় র্যাব /বিজিবি/পুলিশের যৌথ টাস্কফোর্স গঠন করা, ধর্ষণজনিত ঘটনা বা অপরাধের জন্য আলাদা দ্রুত ট্রাইবুনাল গঠন এবং ৩০-৬০ কার্যদিবসের মধ্যে বিচারকার্য সম্পন্নের নিশ্চিত করা, ধর্ষিতার বিনামূল্যে চিকিৎসা এবং তার পরিবারকে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সকল প্রকার সহায়তা প্রদান করা, ইতিপূর্বে সকল ধর্ষণ মামলার রায় ৬ মাসের মধ্যে সম্পন্ন করা, ধর্ষণ ও অপরাধ প্রতিরোধে নির্জন রাস্তায় সচল সিসিটিভি স্থাপন করা এবং ধর্ষণকারী ও তার পরিবারকে সামাজিকভাবে বয়কট করা এবং আশ্রয়দাতাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
এ সময় বক্তারা মানববন্ধনে দেশব্যাপী নারী নির্যাতনকারী ও ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানান।
খুলনা গেজেট/এনএম