পাঁচ বছর ধরে দায়িত্বে থাকা ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেলকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে পাঁচ বছরে তিনি বেতন-ভাতাসহ যেসব সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন সেসব বাবদ ৩৩ লাখ ২৬ হাজার ৬১৯ টাকা আগামী তিন মাসের মধ্যে ফেরত দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হলে জেলা প্রশাসককে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং তফসিল অনুযায়ী আসন্ন ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার কথা বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) হাইকোর্টের বিচারপতি জেবিএম হাসানের বেঞ্চ এই রায় দেন।
এর আগে ২০১৯ সালে অ্যাডভোকেট এএসএম শহীদ উল্যাহ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আদালতে মামলা করেন। মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পান মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল। আমি সোহেল চৌধুরীর প্রতিপক্ষ হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিই। আমার মনোনয়নপত্র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা অবৈধ ঘোষণা করেন। পরে জেলা প্রশাসক বরাবর আপিল করি। সেখানেও অবৈধ ঘোষণা করা হয়। পরে হাইকোর্টে আপিল করি। হাইকোর্ট আমার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন। হাইকোর্টের নির্দেশে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আমাকে প্রতীক দিয়েছেন। আমার প্রতীক ছিল দোয়াত কলম। আমি এক সপ্তাহ নির্বাচনী প্রচারণায় ছিলাম। এরপর সোহেল চৌধুরী হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেছেন সুপ্রিম কোর্টে। সপ্রিম কোর্ট উভয় পক্ষের শুনানির পর ছাগলাইয়া উপজেলা নির্বাচন স্থগিত করেন। এরপর করোনার কারণে ভোট বন্ধ ছিল ২ থেকে আড়াই বছর।’
শহীদ উল্যাহ বলেন, ‘গত রোজার ঈদের আগে আমি সোহেল চৌধুরীর বিরুদ্ধে রুল ইস্যু করেছি। রুল ইস্যুর পর হাইকোর্ট (বর্তমানে যে কোর্ট রায় দিয়েছেন) মেজবাউল হায়দার চৌধুরীর কাছে জানতে চেয়েছে- আপনি কোন ক্ষমতার বলে গেজেট বাদে, শপথ বাদে ক্ষমতায় বসে আছেন। চার সপ্তাহের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে। এটার পরিপ্রেক্ষিতে সোহেল চৌধুরী কোর্টে অ্যাপেয়ার করেছেন। ১৫ দিনের শুনানি শেষে আজ (বৃহস্পতিবার) রায় ঘোষণা করা হয়েছে। রায়ে আমাকে বৈধ ঘোষণা করেছে। আরেকজন প্রার্থী আবদুল হালিমকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচন পঞ্চম হবে নাকি ষষ্ঠ হবে তা পুরো রায় ঘোষণার আগে বলা যাচ্ছে না।’
অ্যাডভোকেট এএসএম শহীদ উল্যাহর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কফিল উদ্দিন।
খুলনা গেজেট/কেডি