নড়াইলের লোহাগড়ায় আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। এ মৌসুমে আমন ধানের ভালো ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। কৃষকরা প্রানভরে ধান কেটে মাড়াইয়ের কাজ করছেন। সেই সঙ্গে কৃষাণীরাও বসে নেই, তারাও মনের আনন্দে ধান শুকিয়ে গোলায় তোলার কাজে সাহায্য করছেন। ইতিমধ্যে ধান কাটার জন্য বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে কাজের শ্রমিকরা এলাকায় আসতে শুরু করেছে।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার লাহুড়িয়া, শালনগর, নলদী, মরিচপাশা, কুমড়ি, তালবাড়িয়া, ধোপাদাহ, রাধানগর, গন্ডব এলাকায় কৃষকরা ধান কাটা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ মৌসুমে লোহাগড়া উপজেলায় বিভিন্ন উচ্চ ফলনশীল জাতের আমন ধানের চাষ হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। ফসলের দাম ভালো থাকায় এ বছর ধান কাটা শ্রমিকের কোন সংকট লক্ষ্য করা যায়নি।
লাহুড়িয়া ইউনিয়নের এগারনলী গ্রামের কৃষক মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, পোকামাকড়ের আক্রমণ ও কোন ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে না পড়ায় আমনের ফসল হয়েছে ভালো। এ মৌসুমে ২৫০ শতাংশ জমিতে আমন ধান চাষ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে।
এ বিষয়ে কৃষক মোঃ তবিবর শেখ এর সাথে আলাপ করে জানা গেছে, এই বছর সরিষা, মুশুরী, কলাই ও গমের দাম থাকায় অনেক কৃষক অগ্রীম আমন ধান কাটা শুরু করেছেন বলে জানান তিনি।
ধানের ভালো দাম থাকায় অনেক কৃষি নির্ভর পরিবার বাড়ির আঙ্গিনা ও আশপাশ পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু করেছেন। তাদের মাঝে অনেক উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বর্তমান প্রতি মণ ধানের দাম ১০৫০ টাকা থেকে ১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ধান বিক্রি করে চাষিরা পরবর্তী কৃষিপণ্য সরিষা, মুশুরী, কলাই ও গম চাষের অর্থ যোগান দিচ্ছেন।
লোহাগড়া উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর লোহাগড়া উপজেলায় ১০ হাজার ৪৩৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এ বছর আমন ধান ১১ হাজার ৪০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৬০৫ হেক্টর বেশি।
লোহাগড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ রইচউদ্দীন জানান, আবহাওয়া অনুকূল ও পরিচর্যার কারনে চলতি মৌসুমে উপজেলায় আমন ধানের ফলন ভালো হয়েছে। উপজেলার সর্বত্রই পুরোদমে ধান কাটা শুরু হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সর্বত্রই খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। দেওয়া হচ্ছে প্রয়োজনীয় পরামর্শ।