আজ ৮ ডিসেম্বর, নড়াইল জেলার লোহাগড়া থানা হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধারা গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে পাক বাহিনী ও তাদের দোসরদের পরাজিত করে লোহাগড়া থানা পাক হানাদার মুক্ত করেন। থানা হানাদার মুক্ত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষ ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দিয়ে রাস্তায় নেমে আসে। সর্বত্র পত্ পত্ করে উড়তে থাকে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা।
ইতিহাস থেকে জানা গেছে, মধ্য নভেম্বরে লোহাগড়া থানার উত্তর এলাকা পাক হানাদার মুক্ত হয়। এরপর দক্ষিণ এলাকা মুক্ত করার জন্য মুক্তিযোদ্ধারা পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। ৭ ডিসেম্বর কালনা এলাকায় এক গোপন বৈঠক মুক্তিযোদ্ধারা মিলিত হয় এবং ৮ ডিসেম্বর গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে লোহাগড়া থানা আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৮ ডিসেম্বর ফজরের আযানের সাথে সাথে মুজিব বাহিনীর প্রধান, সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত শরীফ খসরুজ্জামানের নেতৃত্বে তালুকদার আবুল হোসেন খোকন, শেখ ইউনুস আলী, গোলাম কবির, হাবিবুর রহমানসহ ২০০ জনের একদল মুক্তিযোদ্ধা গেরিলা কায়দায় লোহাগড়া থানা আক্রমণ করেন।
থানা আক্রমণের সময় পাক হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে কোলা গ্রামের হাবিবুর রহমান ও যশোর সদর উপজেলার জঙ্গলবাঁধাল গ্রামের মোস্তফা কামাল তাজ নিহত হন। লোহাগড়া থানা আক্রমণকালে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ৪১ জন পাক সেনা আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়।
লোহাগড়া থানা হানাদার মুক্ত হওয়ার পর সম্মুখ যুদ্ধে নিহত শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমানকে থানা এলাকায় এবং মোস্তফা কামাল তাজকে ইতনা স্কুল চত্বরে কবর দেওয়া হয়। লোহাগড়া মুক্ত দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ দিন ব্যাপী নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে।
খুলনা গেজেট/এনএম