উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ার রাজনৈতিক বিভিন্ন গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (২৭ আগস্ট) দেশটির রাজধানী ত্রিপোলিতে একদিনের এই প্রাণঘাতী সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ২৩ জন। আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ।
এদিকে বিবদমান রাজনৈতিক গ্রুপগুলোকে নিজেদের মধ্যে শত্রুতা অবিলম্বে বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। রোববার (২৮ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
ত্রিপোলির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ে সময় কমপক্ষে ২৩ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আরও কয়েক ডজন মানুষ আহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে তরুণ কমেডিয়ান মুস্তফা বারাকাও রয়েছেন বলে একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
২০১১ সালে সামরিক জোট ন্যাটো-সমর্থিত বিদ্রোহের পর থেকে লিবিয়ায় বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় এবং দেশটির দীর্ঘদিনের শাসক কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফি ক্ষমতাচ্যুত হয়। আর এরপর থেকে উত্তর আফ্রিকার এই দেশটিতে অস্থিতিশীলতা চলছে। তা সত্ত্বেও গত দুই বছরে তুলনামূলকভাবে শান্ত সময় পার করেছে লিবিয়া।
বিবিসি বলছে, শনিবার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের সশস্ত্র বাহিনী ফাথি বাশাঘার অনুগত মিলিশিয়াদের একটি বহরকে পেছনে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করে। দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় পার্লামেন্ট ফাথিকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং এই কারণে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের তিনি একজন প্রতিদ্বন্দ্বী।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ছোট অস্ত্রের মাধ্যমে গুলিবর্ষণ ও বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। শহরজুড়ে কালো ধোঁয়া উঠতেও দেখা যায়।
লিবিয়ার জরুরি পরিষেবাগুলো জানিয়েছে, উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে বেশ কয়েকটি হাসপাতাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সংঘর্ষের পর আশপাশের এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
জাতিসংঘের লিবিয়া মিশন বলেছে, এই দুই রাজনৈতিক গ্রুপের মধ্যে যুদ্ধে ‘বেসামরিক জনবহুল আবাসিক এলাকায় নির্বিচারে মাঝারি এবং ভারী গোলাবর্ষণ’ করা হয়েছে। একইসঙ্গে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বানও জানিয়েছে সংস্থাটি।
বিবিসি বলছে, তেল-সমৃদ্ধ এই দেশটির জীবনযাত্রার মান একসময় ছিল আফ্রিকা মহাদেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। সেসময় এই দেশটিতে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা এবং বিনামূল্যে শিক্ষার সুযোগও ছিল।
কিন্তু লিবিয়ার যে স্থিতিশীলতা দেশটিকে সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে গিয়েছিল সেটি কার্যত নষ্ট হয়ে গেছে এবং ২০১১ সাল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বী বাহিনীগুলোর মধ্যে ঘন ঘন লড়াইয়ের সাক্ষী হয়েছে ত্রিপোলি।