খুলনায় লাইসেন্সবিহীন মেডিকেল ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেন সাপ্লাই ব্যবসা করার অভিযোগে রকি অক্সিজেন কারখানায় অভিযান পরিচালনা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময়ে জাল সনদ প্রদর্শন করায় ওই প্রতিষ্ঠানের মালিককে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। মঙ্গলবার দুপুরে ২নং কাস্টমঘাট এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নেতৃত্ব দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অপ্রতিম কুমার চক্রবর্তী। তিনি বলেন, লাইসেন্সবিহীন তারা অক্সিজেনের ব্যবসা করছিল। প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন লিন্ডা, স্পেক্ট্রাসহ নামীদামি ব্যান্ডের মেডিকেল অক্সিজেন সিলিন্ডার ক্রয় করে তাতে ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেন ভরে খুলনার বিভিন্ন হাসপাতালে সরবরাহ করে আসছিল যেটি রোগীদের জন্য খুবই ক্ষতিকর। অভিযানের সময়ে কারখানার গোডাউন থেকে ৫টা অক্সিজেন ভর্তি স্পেক্ট্রা সিলিণ্ডার, ১৮টি খালি লিন্ডা ব্রান্ডের সিলিণ্ডারসহ ২৩৩ টি ইন্ড্রাস্টিয়াল গ্যাস সিলিন্ডার জব্দ করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি মেডিকেল অক্সিজেন গ্যাস উৎপাদনের অনুমোদনের স্বপক্ষে কোন প্রকার কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হয়। এ অভিযানের সময় দুদক, বিস্ফোরক ও ঔষধ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শিল্পকারখানায় লোহাকাটাসহ ভারী কাজে ব্যবহৃত অক্সিজেন খুলনা জেলার বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে রোগীদের সরবরাহ করার অভিযোগের ভিত্তিতে এ অভিযান চালানো হয়।
দুদকের একটি সূত্র জানায়, বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে শিল্পকারখানায় লোহা কাটাসহ ভারী কাজে ব্যবহৃত অক্সিজেন খুলনা জেলার বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে রোগীদের সরবরাহ করা হচ্ছে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে রাশিদা মেমোরিয়াল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক এবং লাইফ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার এন্ড হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময়ে অনুমোদিত দুইটি মেডিকেল অক্সিজেন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান লিন্ডে বিডি ও স্পেক্ট্রা কোম্পানির সিলিন্ডার পাওয়া যায়। কিন্তু মার্চ এর পূর্বে কোন প্রতিষ্ঠান থেকে ডায়াগনস্টিক সেন্টার দুটি অক্সিজেন সিলিন্ডার ক্রয় করায় তার কোন ক্রয় ভাউচার/রসিদ সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়। পরবর্তীতে তারা ক্রয় ভাউচার/রসিদ সরবরাহ করবে বলে জানান।
অভিযোগ সংশ্লিষ্ট অনুমোদিত অক্সিজেন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান “রকি অক্সিজেন” নামক প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। উক্ত প্রতিষ্ঠানে মেডিকেল অক্সিজেন উৎপাদন ও বাজারজাত করণের কোন লাইসেন্স না থাকা সত্ত্বেও অভিযানকালে সেখানে শিল্পকারখানায় ব্যবহৃত গ্যাসের পাশাপাশি লিন্ডে বিডি ও স্পেক্ট্রা কোম্পানির সিল সম্বলিত মেডিকেল কাজে ব্যবহৃত অক্সিজেন গ্যাসের অনুরুপ সিলিন্ডার পাওয়া যায়। যার মধ্যে পাঁচটিতে গ্যাস ভর্তি ছিল এবং ত্রিশটি সিলিন্ডার খালি ছিল। প্রতিষ্ঠানটি মেডিকেল অক্সিজেন গ্যাস উৎপাদনের অনুমোদনের স্বপক্ষে কোন প্রকার কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হয়। অনুমোদন বিহীন প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করার অপরাধে তাৎক্ষণিকভাবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে উক্ত প্রতিষ্ঠানের মালিক খুরশিদ আলমকে উল্লিখিত সাজা ও অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।
খুলনা গেজেট/এনএম