লকডাউন শিথিলের প্রথম দিনেই বাগেরহাট শহর ও বিভিন্ন বাজারে মানুষের উপচে পড়া ভীড় ছিল। বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) সকাল থেকে দিনব্যাপি বাগেরহাট শহরের সাধণার মোড়, ফলপট্টীর মোড়, রাহাতের মোড়, কাপড় পট্টী, কাঁচা বাজার সব জায়গায় ভীড় লেগেই ছিল। মোটরসাইকেল, রিকশা ও অটোর উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মত। সাধারণ মানুষের মুখে মাস্ক থাকলেও ছিল না সামাজিক দূরত্ব। মাস্ক ছাড়াও দেখা গেছে অনেককে। বিভিন্ন দোকানে ক্রেতাদের ভীড় ছিল। পুলিশের তৎপরতার মধ্যে ভীড় ও যানজট লেগেছিল গুরুত্বপূর্ণ মোড় গুলোতে। তবে মাস্ক পরিধান নিশ্চিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ আজিজুর রহমান।
দুপুরে বাগেরহাট শহরের প্রাণকেন্দ্র সাধণার মোড়ে রিকশা ও অটোর দীর্ঘ লাইনের সাথে মানুষের উপচে পড়া ভীড় দেখা যায়।এক সাথে অনেক মানুষ ছুটছে। ফলপট্টী মোড়েরও একই অবস্থা ছিল। বাজারে আসার কারণ জানতে চাইলে বেশিরভাগের উত্তর জরুরী কাজে এসেছি। জরুরী কাজটা কি! এমন প্রশ্নেও তাদের উত্তর জরুরী কাজ ভাই। এক ধরণের অজুহাত নিয়েই বাড়ির বাইরে এসেছেন তারা এমন মন্তব্য করেছেন অনেকে।
সাধণার মোড়ে দাড়িয়ে থাকা রফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বলেন, ভাই এত মানুষ এক সাথে ঈদের সময়ও দেখা যায় না। কেন যে তারা এসেছে! করোনা কি শেষ হয়ে গেল এই বলে দীর্ঘ নিশ্বাস ছাড়লেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাধাণার মোড়ের এক ঔষধের দোকানদার বলেন, ভাই সরকার বিভিন্ন কারণে লকডাউন শিথিল করেছে। তাই বলে আমাদের ভেঙ্গে চুরে বিনাকাজে বাইরে আসতে হবে, এটা কেমন কথা। এই লকডাউন শিথিলের পরে যে পরিমান বৃদ্ধি পাবে করোনা রোগী, তা কিভাবে শামাল দেবে সরকার এমন প্রশ্ন করেন তিনি।
লকডাউন শিথিলের ফলে মানুষের এমন আচরণে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কেএম হুমায়ুন কবির। তিনি বলেন, করোনার কারণে সরকার যেসব বিধি নিষেধ জারি করেছিল আজকে থেকে সেসসব শিথিল করা হয়েছে। সরকার আসন্ন কোরবানি এবং আর্থিক বিষয় চিন্তা করে লকডাউন শিথিল করেছে। তার মানে এই নয় যে, করোনা সংক্রমণের আর ঝুকি নেই। বরং প্রতিনিয়ত করোনা সংক্রমন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই পরিস্থিতি বিনা কারণে বাইরে না বের হয়ে করোনা সংক্রমণ রোধে ঘরে থাকতে হবে। জরুরী কাজে বাইরে আসলেও মাস্ক পরিধান ও স্বাস্থ্য বিধি মানতে হবে। বাইরের কাজ সেরে দ্রুত বাড়িতে যাওয়ার অনুরোধ করেন তিনি।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ আজিজুর রহমান বলেন, কোরবানিসহ নানা কারণে সরকার লকডাউনের বিভিন্ন শর্ত শিথিল করেছে। আমরা সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের দৈনন্দিন কাজ করার অনুরোধ করছি। তবে এই শিথিলতার সময়ে যাতে মানুষ স্বাস্থ্য বিধি ভঙ্গ না করে সে জন্য আমরা চেষ্টা করছি। মাস্ক পরিধান নিশ্চিতে জেলা প্রশাসন থেকে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি