করোনাভাইরাসের সংক্রমণ উদ্বেগজনক থাকায় চলমান ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করছে সরকার। লকডাউন পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে এ বিষয়ে আগামী সোমবার সভা ডাকা হয়েছে। সেখানেই লকডাউনের বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত হবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা শনিবার (১৭ এপ্রিল ) গণমাধ্যমকে বলেন, করোনার সংক্রমণ এখনো বেশি। তাই লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়তে পারে। তবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে ১৯ এপ্রিলের সভায়।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের তথ্য জানায় সরকার। করোনায় প্রথম মৃত্যু হয় ১৮ মার্চ। এরপর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছিল। কয়েক দফায় বাড়িয়ে টানা ৬৬ দিন সাধারণ ছুটি ছিল। একপর্যায়ে করোনার সংক্রমণ কমেও গিয়েছিল। কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে করোনার সংক্রমণ আবারও বাড়ছে। পরপর দু’দিন করোনায় সংক্রমিত হয়ে মারা গেছে শতাধিক।
এমন পরিস্থিতিতে করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার প্রথমে ৫ এপ্রিল থেকে সাত দিনের জন্য গণপরিবহন চলাচলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ জারি করেছিল। পরে তা আরও দুদিন বাড়ানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত আরও কঠোর বিধিনিষেধ দিয়ে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ শুরু হয়। বর্তমানে লকডাউনে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। তবে বিমান, সমুদ্র, নৌ ও স্থলবন্দর এবং এ-সংক্রান্ত অফিসগুলো এই নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে রয়েছে। প্রথম ব্যাংক বন্ধের ঘোষণা দিলেও পরে তা আবার খোলার সিদ্ধান্ত হয়। আর শিল্পকারখানাগুলো নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু আছে। এখন এই লকডাউন আরও বাড়বে কি না, সেটি নিয়ে মানুষের মধ্যে আলাপ-আলোচনা চলছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পরিকল্পনা হলো, চলমান লকডাউন আরও সাত দিন বাড়িয়ে এরপর আবার শর্তসাপেক্ষে বিভিন্ন বিধিনিষেধ দিয়ে চলা। এভাবে পবিত্র ঈদুল ফিতর পর্যন্ত চলা। পরে পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া। লকডাউন সাত দিন যদি বাড়ে, তাহলে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত হয়। পরের দিন ২৯ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার। এর পরের দু’দিন সাপ্তাহিক ছুটি। এসব বিষয় মাথায় রেখেই লকডাউনের পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকার গঠিত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটিও সিটি করপোরেশন ও পৌর এলাকায় টানা দুই সপ্তাহের লকডাউন দেওয়ার সুপারিশ করেছে।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন শনিবার গণমাধ্যমকে বলেন, লকডাউন বাড়ানোর পরামর্শ আছে। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৯ এপ্রিলের সভার পর ওই দিন বা ২০ এপ্রিল কী হবে, তা জানিয়ে দেওয়া হবে।
খুলনা গেজেট/ এস আই