বিভিন্ন দেশের জাল ভিসা দিয়ে মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া প্রতারক চক্রের অন্যতম হোতা রফিকুল ইসলামকে আটক করেছে র্যাব-৬ এর সদস্যরা। যশোর ও খুলনা র্যাবের যৌথ অভিযানে শনিবার রাতে খুলনা সোনাডাঙ্গা থেকে তাকে আটক করা হয়। আটক রফিকুল ইসলাম যশোর শহরের বেজপাড়া মেইন রোড এলাকার নুর আলী গাজীর ছেলে।
আটকের পর র্যাবের কাছে তিনি প্রতারণার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানান র্যাব-৬ খুলনা জোনের এসপি মাহফুজুল ইসলাম।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগি বাঘারপাড়া উপজেলার শালবরাট গ্রামের ওলিয়র রহমানের ছেলে রায়হান উদ্দিন কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন। রায়হান মামলায় বলেছেন, তার পাশের গ্রামের শরিফুল ইসলামের মাধ্যমে চার পাঁচ মাস আগে রফিকুলের সাথে তার পরিচয় হয়। এরপর রফিকুল তাকে নয় লাখ টাকা চুক্তিতে ফ্রান্সে নিয়ে যাওয়ার প্রলোভন দেয়। গত অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে রায়হানের শশুড় বাড়ি শেখহাটি থেকে ২৬ হাজার টাকা নেন। এরপর ১৬ নভেম্বর ব্যাংকের মাধ্যমে পাঁচ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ২২ নভেম্বর দুই লাখ ৯০ হাজার ও একইদিন বিকাশের মাধ্যমে আরও ৩০ হাজারসহ মোট আট লাখ ৯৬ হাজার টাকা নেয় রফিকুল ইসলাম। এরপর আসামি তাকে ভিসা করে দেয়। ওই ভিসা নিয়ে গত ১৪ ডিসেম্বর ঢাকার ফ্রান্স অ্যাম্বাসিতে গিয়ে জানতে পারেন ভিসাটি জাল। পরে বিষয়টি রফিকুলকে জানিয়ে টাকা ফেরত চাইলে দিচ্ছি দিবানে বলে তিনি সময় ক্ষেপন করেন। দেখা করতে চাইলে নানা তালবাহানা করেন। এরপর বাধ্য হয়ে তিনি র্যাবের আশ্রয় নেন।
র্যাব-৬ যশোরের কোম্পানী কমান্ডার নাজিউর রহমান জানান, তাদের কাছে অভিযোগ আসে ভারতের দিল্লির পাহাড়ডাঙ্গায় ভিসা জালিয়াতি চক্র ভারতে থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এরপর ভিসার নাম করে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে দিল্লিতে নিয়ে পাসপোর্ট আটকে জিম্মি করে রাখেন। আবার কখনো জাল ভিসা দিয়ে দেশে পাঠিয়ে দেন। প্রতারক রফিকুল এখন খুলনায় অবস্থান করছেন। এসময় তিনি খুলনা র্যাবের সহযোগিতা নেন। বিষয়টি র্যাব-৬ খুলনা জোনের এসপি মাহফুজুল ইসলামকে জানান। এরপর খুলনা র্যাবের একটি টিম সোনাডাঙ্গা থেকে তাকে আটক করে কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করেন।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তাজুল ইসলাম জানান, সোমবার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এ বিষয়ে তারা তদন্ত শুরু করেছেন। তদন্তে উঠে এসেছে যশোরে আটক রফিকুলের স্থায়ী বাড়িঘর নেই। ভাসমান অবস্থায় থেকে তিনি ভিসা জালিয়াতিসহ নানা প্রতারণা করে থাকেন।