ঘূর্নিঝড় মোখা নিয়ে উপকূলবাসী আতঙ্কিত হলেও, কোন প্রভাব নেই বাগেরহাটে। শুক্রবার (১২ মে) সকাল থেকেই বিকেল চারটা পর্যন্ত প্রচন্ড গরমের সাথে রৌদ্রজ্জল আবহাওয়া বিরাজ করছে। জেলার কোথাও বৃষ্টি, বা ঝড়ো হাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। পশুর, বলেশ্বর, ভৈরবসহ জেলার বেশিরভাগ নদ-নদীও স্বাভাবিক রয়েছে। জনমানুষের জীবন যাত্রায়ও কোন প্রভাব ফেলতে পারেনি ঘূর্নিঝড়ের এই আগাম সংকেত।
বাগেরহাট শহরের রিকশা চালক আলমগীর মোল্লা বলেন, খবর শোনার পরে খুব চিন্তায় ছিলাম। কিন্তু সকাল থেকে আবহাওয়া ভাল হওয়ায় রিকশা নিয়ে বের হয়েছি। আল্লাহ যেন কোন বড় বিপদ না দেয়।
শরণখোলা উপজেলার নজরুল ইসলাম আকন বলেন, বলেশ্বর ও ভোলা নদীর পানি স্বাভাবিক রয়েছে। আবহাওয়াও অনেক ভাল। আকাশে কোন মেঘ নেই। তবে রাতে কিছু একটা হতে পারে।
শরণখোলা উপজেলার উত্তর সাউথখালী গ্রামের নাজমুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকে এলাকায় খুব রোদ। বলেশ্বর নদীও স্বাভাবিক রয়েছে। আল্লাহ-ই জানে কখন কি হবে।
সুন্দরবনের করমজল বন্য প্রাণি প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির বলেন, সকাল থেকে সুন্দরবনের আবহাওয়া স্বাভাবিক রয়েছে। এখনও কোন সমস্যা নেই।
আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকলেও মোখা মোকাবেলায় সব ধরণের প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রমাসকের নির্দেশে ৪৪৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেই সাথে পর্যাপ্ত শুকনো খাবার, নগদ অর্থ ও প্রয়োজনীয় স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছে।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আজিজুর রহমানের বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় জেলার সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারির ছুটি বাতিল করা হয়েছে। জেলা সদর ও প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ৯ উপজেলায় ৮৪টি মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। রেড ক্রিসেন্ট, ফায়ার সার্ভিস ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কয়েকশ স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপরেও আমরা চাই বাগেরহাটে ঝড়ের বড় ধরণের কোন প্রভাব না পড়ুক।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী ঘূর্নিঝড় মোখা মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিনপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছেন। বাগেরহাটের মোংলা বন্দর থেকে এর দূরত্ব ৯৬৫ কিলোমিটার। এর ফলে মোংলা, পায়রা ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে চার নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/ এসজেড