জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে উপেক্ষা করে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর প্রক্রিয়াকে ‘আত্মহনন’ বলে আখ্যা দিয়েছে বিএনপি। এতে করে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন কঠিন হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রবিবার দলের স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত জানিয়ে গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপি মহাসচিব একথা বলেন।
মিয়ানমার থেকে এসে কক্সবাজারে থাকা ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গার মধ্যে প্রথম দলে দেড় হাজার জনকে শুক্রবার নোয়াখালী উপকূল সংলগ্ন দ্বীপ ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নেওয়ার বিরোধিতা করছে।
শনিবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকের বিষয়ে দেয়া বিজ্ঞপ্তিতে স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সভা জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর আপত্তির মুখে রোহিঙ্গা শরণার্থী স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত ও তা বাস্তবায়নের এই প্রক্রিয়াকে আত্মহননের প্রক্রিয়া হিসাবে অভিহিত করেছে। এর ফলে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সম্মান ও নিরাপত্তার সঙ্গে প্রত্যাবর্তনের দাবি দুর্বল হবে বলে সভা মনে করে।
আরও বলা হয়, ‘সভা মনে করে, এই স্থানান্তর প্রক্রিয়া মিয়ানমারের স্বার্থ পূরণ করতে সাহায্য করবে এবং এই সমস্যা একদিকে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করবে, অন্যদিকে বাংলাদেশের পরিবেশ, অর্থনীতি ও রাজনীতিকে দীর্ঘস্থায়ী নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করবে।’
জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার উদ্বেগের গুরুত্ব অনুধাবন করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তনের স্বার্থে এই স্থানান্তর প্রক্রিয়া অবিলম্বে বন্ধ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। একইসঙ্গে মিয়ানমারের উপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াতে কূটনৈতিক উদ্যোগ বাড়ানোর পরামর্শও দিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে তাদের আন্তরিকতা ও সদিচ্ছা প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে। দীর্ঘদিনেও এই সমস্যাটিকে কার্যকরীভাবে আন্তর্জাতিকীকরণ করতে তারা ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় বিজয়ের মাসে ঢাকায় রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ করতে পুলিশি অনুমতি নেওয়ার বাধ্যবাধকতা জারিতে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
এছাড়া কুষ্টিয়ায় বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর ও জেলা সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেনের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগের ঘটনার নিন্দাও জানিয়েছে স্থায়ী কমিটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়ে সরকার জনঅসন্তুষ্টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ঔপনেবেশিক পন্থায় হিংসা ও সাম্প্রদায়িকতার উস্কানি দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার হীন অপচেষ্টা করছে।’
বৈঠকে স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু অংশ নেন।
খুলনা গেজেট/কেএম