রূপসা উপজেলার আনন্দনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ফারজানা আক্তার মিমের লাশ উদ্ধারের পর এ পর্যন্ত পুলিশ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। নিহতের বাবা ৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনের নামের থানায় মামলা দায়ের করেছেন। তবে গ্রেপ্তার হওয়া কেউ হত্যাকান্ডের ব্যাপারে কোন তথ্য দেয়নি বলে রূপসা থানা পুলিশ জানিয়েছে।
গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা হলেন, মিমের প্রেমিক হুসাইন, প্রতিবেশী চাচা রবিউল ও কাইয়ুম। এজাহারভুক্ত অপর পলাতক আসামি রাসেল ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দিপক কুমার দাস বলেন, সোমবার রাতে লাশ উদ্ধারের পর হুসাইন ও রবিউলকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার কাইয়ুমকে আটক করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়া কেউই এ হত্যাকান্ড সম্পর্কে কোন তথ্য দেয়নি। আগামীকাল তাদের আদালতে প্রেরণ করা হবে।
নিহত মিমের বাবা সিরাজুল ইসলাম মন্টু এসকেভেটর মেশিনের মাধ্যমে বালু উত্তোলনের কাজ করেন। শনিবার রাতে তিনি বাড়ির বাইরে ছিলেন। ছোট ছেলে রিয়াজ তাকে ফোনের মাধ্যমে জানায় মিমকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে খোঁজ নেওয়া হয়। সবশেষ তাকে একটি জঙ্গল থেকে উদ্ধার করা হয়। তবে জীবিত নয় মৃত।
তিনি আরও বলেন, মে মাসের ২০ তারিখ রাতে প্রেমিক হুসাইনের হাত ধরে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। পরে ওই রাতে ডোবা বাজার থেকে তাদের দু’জনকে আটক করা হয়। হুসাইনকে গোয়ালবাড়ির চর থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয। এরপর সে ঘাটভোগ এলাকায় চলে যায়। মিমকে আনন্দনগর দাদা বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
দাদা বাড়িতে থেকে হুসাইনের সাথে যোগাযোগ রাখত মিম। শনিবার রাতে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় মিম প্রতিবেশী রাজার স্ত্রী আনজিরাকে বলে আমি চলে যাচ্ছি। এসময়ে তাকে জিজ্ঞাসা করা হয় কার সাথে যাচ্ছ উত্তরে মিম বলে রবিউল কাকা আমাকে হুসাইনের কাছে পৌছে দিবে। রবিউলকে এব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি এর কোন উত্তর দিতে পারেনি। সোমবার সন্ধ্যায় রূপসা উপজেলার গোয়ালবাড়ির চর এলাকার জনৈক সুজনের পানের বরজের নিকট একটি গভীর জঙ্গল থেকে মিমের মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। পরে মিমের পরিবারকে খবর দেওয়া হলে তারা লাশটি শনাক্ত করে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে উল্লিখিত আসামিদের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন মিমের বাবা, যার নং ১৬।
লাশের ময়নাতদন্ত শেষে দুপুরের পর মরদেহ বাড়িতে নেওয়া হয়। আসরের নামাজের পর স্থানীয় একটি মসজিদে নামাজে জানাযা হয়। এরপর আনন্দনগর কবরস্থানে মিমের লাশ দাফন করা হয়।