পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী আশোক রায় নিহত ও দোকানটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় চোখে অন্ধকার দেখছেন স্বজনরা। আর্থিক সংকটে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ দেখছেন তারা। অপরদিকে একজনকে চাপাদিয়ে হত্যা ও তিনটি পরিবারকে অর্থনৈতিক পঙ্গু বানিয়ে ফেলার পরও আইনি ফাঁক গলে রেহাই পাওয়ার চেষ্টা করছে ট্রাকের চালক ও মালিকপক্ষ।
ওভারলোডিংয়ের কারণে গত ৭ আগস্ট ব্রিজে উঠতে না পেরে খুলনার রূপসা উপজেলার আলাইপুর বাজারে ট্রাক চাপা দিয়ে ব্যবসায়ী অশোর রায়কে হত্যা ও তাদের পরিবারের উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন তিনটি দোকানঘর ভেঙ্গে দেওয়া হয়। এতে ওই পরিবারটির প্রায় ১৩ লাখ টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানা যায়, গত ৭ আগস্ট রাত আনুমানিক ১০ টার সময় বালু ভর্তি ট্রাকটি আলাইপুর ব্রীজে উঠার চেষ্টা কালে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মুদি দোকানের উপর দিয়ে অতিক্রম করে। স্থানীয়রা ঘাতক ট্রাকটি আটক করে পুলিশি হেফাজতে দেন। ট্রাকটির নম্বর- কুষ্টিয়া ট- ১১-২৫৭৭। এ ঘটনায় মুদি ব্যবসায়ী অশোক রায় নিহত হন ও তাঁর দোকান গুড়িয়ে যায়। পাশাপাশি দোকানদার মোঃ আলাল শেখ জানান, আমার ওয়াল্টনের ইলেকট্রনিকস মালামালের শো-রুম ভেঙ্গে প্রায় ৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়।
ফল ব্যবসায়ী স্বপন পাল জানান, তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও একমাত্র জীবিকা উপার্জনের অবলম্বন দোকান ঘরটি ভেঙ্গে গুড়িয়ে গেছে।
বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল ফকির জানান, ভেঙ্গে গুড়িয়ে যাওয়া ৩টি দোকান তাছাড়াও বাজারের অন্য ব্যবসায়ীদের ৮ টি দোকানে ট্রাকের ধাক্কায় ফাটল ধরাসহ নানাবিধ ক্ষতি হয়েছে। তবে ৮টি দোকানের ক্ষতির পরিমাণ এখনো পরিপূর্ণ অনুমান করা যায়নি। তাছাড়া বাজারের ব্যবসায়ীরা বার বার সড়ক দুর্ঘটনার কারণে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এ কারণে ব্যবসায়ীরা ক্ষতি পুরণের দাবিতে দোকানপাট বন্ধ ঘোষণা করলে উপজেলা প্রশাসন তাৎক্ষণিক বাজার কমিটির নেতৃবৃন্দ ও ব্যবসায়ীদের সাথে আলোচনা করে ক্ষতি পুরণের সিদ্ধান্ত নিলে ব্যবসায়ীরা দোকান খুলে দেন।
তিনি জানান, ব্যবসায়ী অশোক রায় ও ক্ষতিগ্রস্তরা মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাদের স্বাভাবিক বেঁচে থাকাই অসম্ভব হয়ে পড়ছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, আর্থিক হিসেবে তিনটি পরিবারের ১৩/১৪ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু ট্রাক চালক ও মালিকপক্ষ তাদের দায় থেকে বাঁচার চেষ্টা চালাচ্ছে। তা হলে নিহত অশোকের পরিবারসহ ক্ষতিগ্রস্তরা পথে বসবে। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার ও ক্ষতিপূরণ চান।
খুলনা গেজেট/কেডি