ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের জেরে রাশিয়ার ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি করছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যরাষ্ট্রসমূহ।
কিন্তু ন্যাটোর একমাত্র এশীয় সদস্যরাষ্ট্র তুরস্ক জানিয়েছে, আপাতত রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির কোনো পরিকল্পনা নেই আঙ্কারার।
মঙ্গলবার তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা আনাদোলু এজেন্সিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু বলেন, ‘রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির কোনো পরিকল্পনা আমরা করছি না এবং এ ব্যাপারে আমাদের ওপর কোনো চাপও নেই।’
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার ওপর একরাশ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ইতোমধ্যে ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ইউরোপে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যক্রম ও সম্পদে স্থগিতাদেশ দিয়েছে। ইউরোপে রুশ ব্যাংকগুলোর কার্যক্রমেও দেওয়া হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। আন্তর্জাতিক মুদ্রা লেনদেন ব্যবস্থা সুইফট থেকেও বেশ কিছু রুশ ব্যাংককে বাদ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া ইউরোপে রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহের পাইপলাইন নর্ড স্ট্রিম ২ থেকে গ্যাস নেওয়া স্থগিত করেছে জার্মানি। ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র তাদের আকাশসীমায় রুশ বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এমনকি নিষিধাজ্ঞার কারণে রুশ কোম্পানিগুলোকে উড়োজাহাজ ও যন্ত্রাংশ সরবরাহ না করারও ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপীয় কোম্পানিগুলো।
তবে তুরস্ক শুরু থেকেই নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিপক্ষে ছিল। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি তুরস্কের প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন জার্মানির জাতীয় দৈনিক ডাই ওয়েল্টকে দেওয়া এক সক্ষাৎকারে এ সম্পর্কে বলেন, ‘রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি অর্থহীন। এর মাধ্যমে সংকটের কোনো সমাধান হবে না, উপরন্তু তা দীর্ঘস্থায়ী হবে। কারণ, রাশিয়া ন্যাটোকে হুমকি মনে করে।’
জ্বালানি সম্পদের জন্য রাশিয়ার ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল তুরস্ক। ২০১৯ সালে রাশিয়ার কাছ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি কেনে তুরষ্ক, যা দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক সম্পর্ক এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যায়।
সূত্র: আরআইএ নভোস্তি