সিরিয়ার উদ্দেশে যাওয়া রাশিয়ার বেসামরিক ও সামরিক বিমানের জন্য নিজের আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে তুরস্ক। আগামী তিন মাসের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। শনিবার (২৩ এপ্রিল) তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু একথা জানিয়েছেন।
তুরস্কের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে শনিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। মেভলুত কাভুসোগলু বলেছেন, তুরস্কের আকাশসীমা ব্যবহার করে রাশিয়ার কোনো বিমান সিরিয়ায় যেতে পারবে না। রাশিয়ার সামরিক ও বেসামরিক সব রকমের বিমানের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা তিন মাসের জন্য বহাল থাকবে।
তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, তুস্কের এই সিদ্ধান্ত তিনি রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভকে জানিয়েছেন এবং ল্যাভরভ তার দেশের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বলেছেন। এর এক অথবা দুই দিন পর প্রেসিডেন্ট পুতিন তুরস্কের ওপর দিয়ে রুশ বিমান পরিচালনা না করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
উরুগুয়ে যাওয়ার পথে বিমানে সাংবাদিকদের তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তুরস্কের আকাশসীমা ব্যবহার করে রাশিয়া সিরিয়ায় কোনো সেনা আনা-নেওয়া করতে পারবে না। তুরস্কের পক্ষ থেকে এই ঘোষণা দেওয়ার পর রাশিয়া কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেনি।
২০১১ সালে সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদবিরোধী এক বিক্ষোভের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী ব্যবস্থার নেওয়ার মধ্য দিয়ে দেশটিতে যে সংঘাতের সূচনা হয়; সেটিই পরে গৃহযুদ্ধে রূপ নেয়, যা এখনও চলছে।
এক দশকের এই সংঘাতে কমপক্ষে তিন লাখ ৮০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং দেশটির অর্ধেক জনগোষ্ঠীই বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে। বিভিন্ন দেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছেন সিরিয়ার অন্তত ৬০ লাখ মানুষ।
সিরিয়ার এই সংঘাতে ইরান এবং রাশিয়া একসঙ্গে প্রেসিডেন্ট বাশার আসাদের সমর্থনে বিরোধী যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। অন্যদিকে আসাদের বিরোধী যোদ্ধাদের সমর্থন দিয়েছে তুরস্ক।
অবশ্য ইউক্রেন ইস্যুতে সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য হয়েও রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয়নি তুরস্ক। এমনকি তুর্কি সরকার রাশিয়ার কাছ থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র কিনেছে যা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার পশ্চিমা মিত্রদের সঙ্গে তুরস্কের টানাপড়েন চলছে।