বাগেরহাটের রামপালে এলজিইডি’র অর্থায়নে প্রায় সাড়ে ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে তিনটি ব্রীজের কাজ দীর্ঘ দিনেও শেষ হয়নি।ঠিকমতো নজরদারীর অভাব ও অব্যাবস্থাপনার কারণে যথা সময়ে সম্ভব হয়নি বলে মনে করেন সচেতন মহল। এর মধ্যে বগুড়া নদীর উপরে নির্মিত ব্রীজের পাশে মই দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলাচল করছে মানুষ। বিকল্প সড়ক গুলো ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ব্রীজগুলো যথা সময়ে নির্মাণ সম্পন্ন না হওয়ায় মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
ব্রীজ ৩ টির ৯৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে দাবি করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ বছরের জানুয়ারীর মধ্যে মানুষ চলাচলের জন্য ব্রীজগুলো উম্মুক্ত করে দেয়ার সম্ভবনার কথা জানানো হলেও সেটি সম্ভব হয়নি। উপজেলা এলজিইডি অফিস তাগিদ দেওয়ার পরও কেন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হচ্ছে না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
জানাগেছে, উপজেলার ফায়লাহাট-চাকশ্রী সড়কের ফয়লা ব্রীজের নির্মাণ কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আইটি এন্ড জেই। তারা ২০১৮ সালের ১৬ অক্টোবরে ব্রীজের কাজ শুরু করেন। ব্রীজটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ২ কোটি ১০ লক্ষ ৪০ হাজার ১১০ টাকা। এটি ৩০ মিটার দৈর্ঘ্য। ওই ব্রীজের ডিজাইন সমস্যা, করোনার প্রকোপ ও অর্থ ছাড়ের জটিলতায় যথা সময়ে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়নি। তবে ইতিমধ্যে ওই ব্রীজের ৯৮ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে বলে রামপাল উপজেলা এলজিইডি অফিস জানায়। এটা আগামী জুনের মধ্যে জনসাধারণের জন্য উম্মুক্ত করে দেয়া সম্ভব হবে।
বগুড়া খেয়াঘাট ব্রীজটির কাজ শুরু করে একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আইটি এন্ড জেই। ৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের ওই ব্রীজটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৯২ লক্ষ ৫১ হাজার ১৩৩ টাকা। এটাও করোনা, সীমানা সমস্যা ও অর্থ ছাড়ের জটিলতায় পিছিয়ে পড়ছে। ইতিমধ্যে ব্রীজটির ৯০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। এটি ডিসেম্বরের মধ্যে চলাচলের জন্য উম্মুক্ত করে দেয়ার কথা বলা হলেও সেটি সম্ভব হয়নি। জুন মাস পর্যন্ত লেগে যেতে পরে বলে জানানো হয়েছে।
গৌরম্ভা ইউনিয়নের কন্যাডুবি খেয়াঘাটের ব্রীজটি ৪৮ মিটারের। এটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৪৩ লক্ষ ৯৯ হাজার ৯৯৩ টাকা। ২০১৮ সালের ৯ ডিসেম্বরে এম,এস মহিউদ্দিন আহমেদ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এটির কাজ শুরু করেন। ব্রীজটির ৯৫ ভাগ কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। এখন সংযোগ সড়কের কাজ চলছে। ২০২২ সালের জানুয়ারিতেই চলাচলের জন্য উম্মুক্ত করে দেয়ার কথা বলা হলেও তা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. গোলজার হোসেন জানান, তিনটি ব্রীজের একটিতে ডিজাইন সমস্যা হয়েছে। বগুড়া ব্রীজের সীমানা জটিলতায় মামলা হয়েছিল। এরপর আবার পল্লী বিদ্যুতের লাইন সংক্রান্ত সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত নির্মাণ কাজ শেষ করতে আমরা চেষ্টা করছি। করোনার প্রকোপ ও অর্থ ছাড়ের জটিলতায়ও কিছুটা পিছিয়ে পড়লেও খুব দ্রুততার সাথে কাজ এগিয়ে চলছে। এখন সংযোগ সড়কের কাজ চলছে। আগামী ২/১ মাসের মধ্যে সবগুলো ব্রীজ জনসাধারণের চলাচলের জন্য উম্মুক্ত করে দেয়া সম্ভব হবে বলে আশা করেন।
খুলনা গেজেট/ টি আই