রামপালে সোনালি আমন ধান চাষে ইঁদুরের উৎপাতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক। ক্ষেতের কাঁচা ধানগাছ কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে ইঁদুর। আমন ধান ক্ষেতে ব্যাপকভাবে ইঁদুরের আক্রমণ দেখা দেওয়ায় মাথায় হাত পড়েছে কৃষকের। ইঁদুরের উৎপাত ঠেকাতে ফসলের জমিতে ওড়ানো হচ্ছে পলিথিন ও কোথাও কোথাও বিদ্যুৎ তার দিয়ে ইদুর মারা হচ্ছে, এটা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ কাজ করছেন অধিকাংশ কৃষক তবুও কোন প্রতিকার মিলছে না।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, কৃষকদের সরকার প্রণোদনা দেওয়ায় ও খরা থাকায় গতবারের তুলনায় এবার বেশি আমনের আবাদ হয়েছে। এবার উপজেলায় ২০ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা থাকলে আবাদ হয়েছে বেশি জমিতে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আমন ধানের ক্ষেতগুলো কেউ যেন ধারালো কাঁচি দিয়ে কেটে দিয়েছে। অনেক কৃষক ইঁদুর মারার জন্য ওষুধ ব্যবহার করেও ফল পাচ্ছেন না। এ বছর মাঠের ধান ভালো হলেও ইঁদুরের উৎপাতের কারণে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
উপজেলার কাষ্ঠবাড়িয়া গ্রামের খোকন শেখ ও বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মৌসুমের শুরুতেই বৃষ্টির অভাবে ধান রোপণে কিছুটা সমস্যা হলেও মৌসুমের শেষের দিকে এসে বৃষ্টি হওয়ায় ও কৃষকদের চেষ্টায় কিছুটা ক্ষতি কাটিয়ে উঠেছেন তারা। সবুজে ভরে উঠছে পুরো মাঠ। এসময় ক্ষেতের কাঁচা ধানে ইঁদুরের আক্রমণে যেন কৃষকের স্বপ্নভঙ্গ হতে চলেছে। কাঁচা ধানের গাছ ইঁদুর কেটে দেওয়ায় নতুন করে চিন্তায় পড়েছেন তারা। ইঁদুরের কবল থেকে রক্ষা পেতে সব বিভিন্ন ধরণের কীটনাশক ব্যবহার করেও ব্যর্থ হচ্ছেন কৃষক। কৃষকরা ক্ষেতে বিষমাখা বিভিন্ন পদ্ধতিতে টোপ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না।
আমন ধানের ক্ষেতে শুকনো স্থানের চেয়ে পানি জমা ফসলের ক্ষেতে ইঁদুরের আক্রমণ বেশি। তবে কীটনাশক প্রয়োগ করে ইঁদুরের উপদ্রব্য কমাতে না পেরে ক্ষেতের ফসল রক্ষার্থে সনাতন পদ্ধতিতে জমিতে কলাগাছ ও বাঁশের খুঁটিতে পলিথিন বেঁধে উড়িয়ে ফসল রক্ষার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন কৃষকরা।
চাষী দিনবন্ধু শীল জানান, তার ২০ বিঘা জমিতে ৪৯ জাতের ধান রোপণ করেছেন। বেশ কয়েকদিন ধরে ইঁদুর মারাত্মকভাবে ধান কাটা শুরু করেছে। কীটনাশকসহ নানান পদ্ধতি ব্যবহার করছেন। কোনোভাবেই তা প্রতিরোধ করতে পারছেন না। সবাই খুঁটিতে পলিথিন বেঁধে জমিতে দিচ্ছে। দেখি কি হয়। যেভাবে কাটছে এতে ফলন অনেক কমে যাবে বলেও জানান তিনি।
ধান ক্ষেতে ইঁদুরের আক্রমণের কথা স্বীকার করে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওলিয়ার রহমান বলেন, ‘কৃষকদের ইঁদুর নিধনের জন্য বিষমাখা টোপ, ইঁদুর মারার ফাঁদ, গর্তে পানি ভরে ইঁদুর তাড়ানোসহ বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’ইদুর তাড়ানোর বিভিন্ন পদ্ধতি নিয়ে আমাদের মাঠ কর্মীরা নিরলস ভাবে মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি আশা করেন খুব দ্রুতই এর সমাধান হয়ে যাবে।
খুলনা গেজেট/এনএম