রাবির ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে গিয়ে আটক হওয়া খুলনার গাজী মেডিকেল কলেজের অ্যানাটমি বিভাগের প্রভাষক ডা. সমের রায় মূলত রোগী সেজেই পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলেন। তিনি রোল ৮৪৬৪৮-এর পরীক্ষার্থী মোহাম্মদ রাহাত আমীন রিয়াদের পরিবর্তে শেখ রাসেল মডেল স্কুলে পরীক্ষা সম্পন্নও করেছিলেন। কিন্তু ভাগ্যের বিড়ম্বনায় ধরে পড়ে যান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর আরিফুর রহমান জানান, পরীক্ষার মূল প্রার্থী মোহাম্মদ রাহাত আমীন রিয়াদের পরিবর্তে পুরো মাথা এবং মুখ ব্যান্ডেজ করে পরীক্ষার রুমে প্রবেশ করেন ডা. সমের। পরীক্ষা কক্ষে দায়িত্বরত ইন্সটিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের অধ্যাপক জাকির হোসেন ও শেখ রাসেল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলামকে মোটরসাইকেল অ্যাক্সিডেন্টের কথা জানান তিনি।
ডাক্তার সমের পরীক্ষা কক্ষের দায়িত্বরত শিক্ষকদের জানিয়েছিলেন, সকালবেলায় তিনি মোটরসাইকেল এক্সিডেন্ট করেছেন। এক্সিডেন্টের পর মাথা ও মুখে ব্যান্ডেজ করে প্রাথমিক ট্রিটমেন্ট নিয়ে তিনি পরীক্ষা দিতে এসেছেন।
ডাক্তার সমেরের এই অ্যাক্সিডেন্টের কথা শুনে পরীক্ষার রুমের দায়িত্বরত দুই শিক্ষক তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করার কথা বলেন এবং অ্যাম্বুলেন্সও ডাকতে চান। কিন্তু ডাক্তার সমীর পরীক্ষা কক্ষের দায়িত্ব শিক্ষকদের জানান, পরীক্ষা শেষে তিনি ট্রিটমেন্ট নেবেন। এরপর সাড়ে তিনটায় ‘এ’ ইউনিটের চতুর্থ শিফটের পরীক্ষা শুরু হয়। মাথা ব্যান্ডেজ করা অবস্থায় তিনি পরীক্ষা দেন। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর তিনি চলে যাওয়ার জন্য বেশ তাড়াহুড়া করেন।
কিন্তু পরীক্ষা কক্ষে দায়িত্বরত দুই শিক্ষক তাকে একা যেতে দিতে রাজি হননি। দুই শিক্ষক ডাক্তার সমেরের মাথার সিটি স্ক্যানসহ চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন। এজন্য তিনি ডা. সমীরের অভিভাবককে ডাকতে বলেন। এরপরও ডা. সমের একা যেতে চান। কিন্তু শিক্ষকরা তাকে যেতে দেননি। উপায়ন্তর না পেয়ে ডাক্তার সমের মূল পরীক্ষার্থী মোহাম্মদ রাহাত আমিনকে তার অভিভাবক হিসেবে ডাকেন।
রাহাত আমিন সেখানে উপস্থিত হলে দায়িত্বরত দুই শিক্ষক তাকে চিনে ফেলেন এবং প্রক্টরিয়াল বডিকে খবর দেন। পরে প্রক্টরিয়াল বডি তাদের আটক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনে নিয়ে যান। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদে প্রক্সি দেওয়ার কথা স্বীকার করেন ড. সমের। পরীক্ষার জালিয়াতির দায়ে ডাক্তার সমেরকে এক বছর ও প্রার্থী রাহাতকে এক মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক।